প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বর্তমান সমাজে দাঁড়িয়ে গার্হস্থ্য হিংসার মত ভয়ংকর ঘটনার সংখ্যা যেন বেড়েই চলেছে। কখনও শ্বশুরবাড়িতে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন বৌমা, তো কখনও আবার বৌমার কারণে শ্বশুর শ্বাশুড়িকে নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, এমন ঘটনা এখন যেন খুবই সাধারণ হয়ে গিয়েছে। এমনকি এই গার্হস্থ্য হিংসা (Domestic Violence) নিয়ে কম মামলা মোকদ্দমা হয় না। আর এই হিংসার প্রতিরোধ রুখতে এবার বড় পদক্ষেপ নিল সুপ্রিম কোর্ট।
গার্হস্থ্য হিংসার মোকাবিলায় উচ্চ আদালত
খবরের কাগজ খুললেই দেখা যায় গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েই চলেছেন একাধিক নারী। এমনকি সঠিক ভাবে গার্হস্থ্য হিংসা প্রতিরোধ আইন নিয়ে সাধারণ জ্ঞান না থাকায় স্বামী , শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে প্রাণহানি হচ্ছে বিপুল সংখ্যক নারীর। বঞ্চিত থেকে যাচ্ছেন সঠিক বিচার থেকে। এদিকে প্রায় কুড়ি বছর আগে গার্হস্থ্য হিংসা প্রতিরোধ আইন চালু হয়েছিল। ক’দিন আগে ঠিক এমনই একটি গার্হস্থ্য হিংসার মামলার শুনানির সময়ে একই কথা শোনা গিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিভি নাগরত্না এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চে।
এরপর সেই নিয়ে গত ২০ মে এই সংক্রান্ত সাত দফার একটি নির্দেশিকা জারি করেছিলেন বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মা। আজ সেই নির্দেশের সবিস্তার প্রতিলিপি প্রকাশিত হয়েছে। জানা গিয়েছে এদিন সুপ্রিম কোর্ট, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে গার্হস্থ্য হিংসায় আক্রান্তদের নিরাপত্তা প্রদানে সাত দফার নির্দেশিকা জারির প্রতিলিপি প্রদান করেছিল। আর এই সাত দফার নির্দেশিকা আমাদের আজকের প্রতিবেদনে সম্পূর্ণরূপে তুলা ধরা হল, একনজরে পড়ে নিন বিস্তারিত।
সঠিক অফিসার চিহ্নিত
রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনকে নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের জেলা ও তালুক পর্যায়ে কর্মরত অফিসারদের মধ্যে থেকে প্রোটেকশন অফিসার বেছে নিতে হবে। এবং সেই নির্বাচিত অফিসারকে সমস্ত দায়িত্ব পালন করতে হবে। এমনকি নারী ও শিশু সুরক্ষা দফতরের অফিসারদের চিহ্নিত করে জেলা ও তালুক স্তরে নিয়োগ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
সচেতনতা ও প্রশিক্ষণ
গার্হস্থ্য হিংসা রোধ আইনের আওতায় এক জন আক্রান্তকারী কী ধরনের সুযোগসুবিধা পেতে পারেন, সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে জনসাধারণ সহ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি অফিসার, পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মী এবং বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলকে। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করতে হবে। দরকার পড়লে জনসংযোগের জন্য সংবাদমাধ্যমকে কাজে লাগাতে হবে।
দায়িত্বপালনে সজাগ
যেহেতু আইনটির সফল প্রয়োগের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসারেরা যেন নিয়মিত তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন। নারীদের সাহায্যে কী কী করণীয় বিভিন্ন মন্ত্রকের, সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দিষ্ট প্রোটোকল তৈরি করতে হবে।
নিয়োগের সময়সীমা!
নির্দেশিকা জারির মাত্র ৬ সপ্তাহের মধ্যে এই রক্ষাকারী অফিসারদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। আর এই নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য সচিবদের এবং নারী ও শিশু সুরক্ষা দফতর সচিবদের।
আরও দেখুন: স্নাতকস্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে বড় আপডেট! বিজ্ঞপ্তি জারির দিনক্ষণ জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
বিনা খরচে আইনি সাহায্য
কোনও নারী আইনি সাহায্যের জন্যে রাজ্য লিগাল সার্ভিসেস অথরিটি (সালসা) বা জেলা লিগাল সার্ভিসেস অথরিটি (ডালসা)–র দ্বারস্থ হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত আইনি সাহায্যের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তার জন্য নেওয়া হবে না একটা টাকাও। এই পদক্ষেপের অন্যতম কারণ হল এক জন আক্রান্ত যেন এ বিষয়ে সচেতন হন যে, তিনি চাইলেই বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পেতে পারেন। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর দায়িত্ব জেলা ও তালুক স্তরের সচিবদের উপর অর্পণ করা হয়েছে।
শেল্টার হোমের ব্যবস্থা
আক্রান্তদের জন্য ‘নারী নিকেতন’ বা শেল্টার হোমের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। জেলা ও তালুক স্তরে এই ধরনের হোম পর্যাপ্ত আছে কি না, তা দশ সপ্তাহের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে অফিসারদের। যাতে গার্হস্থ্য হিংসার শিকার নারী সেই হোমে নিরাপদে আশ্রয় পেতে পারেন।
প্রচারে জোর
আক্রান্তকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন,তাই এই বিষয়ে যথেষ্ট প্রচার করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে জেলা ও তালুক স্তরের সচিবদের নজর রাখতে হবে।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |