চিকেন স্টিম মোমো, ভেজ মোমো, ফ্রাই মোমো…কী নামগুলো শুনে কি জিভে জল চলে এলো আপনারও? আসারই কথা। এখন এই মোমো খাবারটি অনেকের হট ফেভারিট খাবারে পরিণত হয়েছে। ধোঁয়া ওঠা মোমো ও এক বাটি চিকেন স্যুপ হাতে পেলে আহা স্বর্গ যেন। এই মোমোর ব্যবসা করে অনেকেই আছেন যারা আজ নিজ নিজ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত।
বর্তমান সময়ে মোমোর নাম নিলেই প্রথমেই সবার মাথায় আসে ‘WOW Momo’-র কথা। কিন্তু আরও একটি কোম্পানি এখন এই মোমো বানিয়ে বাজার কাঁপাচ্ছে রীতিমতো। যারা মোমো লাভার তাঁরা নিশ্চয়ই জানবেন ‘মোমো চিত্তে’-র কথা। যারা মোমো খেতে ভালোবাসেন তাদের মধ্যে এই ‘মোমো চিত্তে’ দোকানটির জনপ্রিয়তা বেশ অনেকটাই। কিন্তু এই ‘মোমো চিত্তে’-র পথচলা কীভাবে শুরু হয়েছিল সে সম্পর্কে কিছু জানেন? জানলে অবাক হবেন।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বযুদ্ধ, এলিয়েন, উল্কাপিণ্ডের হামলা! ২০২৪ নিয়ে ভয়ঙ্কর ভবিষ্যদ্বাণী জীবন্ত নস্ত্রাদামুসের
এখন তো শহরে বেশ অনেকগুলিই আউটলেট রয়েছে এই ‘মোমো চিত্তে’-র। কিন্তু এক সময়ে এই ‘মোমো চিত্তে’-র প্রতিস্থাপক মৌমিতা মিস্ত্রি ঠ্যালা গাড়ি নিয়ে মোমো বিক্রি করতেন। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন একদম। প্রথমে তিনি স্টিম মোমো বিক্রি করতেন। এরপর পিৎজা মোমো, মালাই মোমো বানাতে শুরু করেন মৌমিতা। ব্যস এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। নানা ধরনের ফিউশন মোমো বানিয়ে সকলের হৃদয়ে আস্তে আস্তে নিজের জায়গা পাকা করতে শুরু করে দেন মৌমিতা। সেই কথায় আছে না কারোর পৌষ মাস তো কারোর সর্বনাশ। মৌমিতা মিস্ত্রির ক্ষেত্রে এই কথাটা যেন অক্ষরে অক্ষরে ফলে যায়।
মোমো চিত্তের সাফল্যের কাহিনী
করোনা মৌমিতার জীবনে শাপে বর হিসেবে দেখা দেয়। অজয়নগরে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে তিনি। পাড়ায় বাবার মুদির দোকান। দাদা-দিদিরা সরকারি স্কুলের শিক্ষক। বাকিদের মতো তাঁরও ভালো চাকরি করার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু বাধ সাধে এই করোনা। যদিও এই করোনা সময়তেই তাঁর মাথায় ব্যবসা করার বুদ্ধি খেলে যায়। নিজের ব্যবসা দাঁড় করানোর লক্ষ্যমাত্রা নেন তিনি। ২৬ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে বাইপাসের ধারে এক অন্ধকার জায়গায় ঠেলাগাড়িতে মোমো বিক্রি শুরু করেন। প্রথমেই কিন্তু সাফল্য মেলেনি। কিন্তু সেই যে কথায় আছে না, ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। এক্ষেত্রেও তাই। কঠিন সময়ে পাশে পেয়েছেন জীবনসঙ্গী বিদ্যুৎ হালদারকে। সেই সময় অবশ্য স্বামী ছিলেন না। এখন তাঁদের দাম্পত্য জীবন আড়াই বছর হয়ে গিয়েছে। মৌমিতা জানান, ‘‘বিদ্যুৎ আমার পাশে না থাকলে হয়তো এত কিছু করতে পারতাম না।’’
তবে শিক্ষিত হয়েও শেষমেশ মৌমিতার মোমো বিক্রির ব্যাপারটা মোটেও ভালো চোখে নেন না কেউ। তবে সকলের টিপ্পনিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আজ গুটিগুটি পায়ে বাংলাজুড়ে ১৮টি আউটলেট খুলে ফেলেছেন মৌমিতা।