যে হারে বাংলায় দিন দিন গরম বাড়ছে, এহেন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে হয় কেউ সমুদ্র নয়তো পাহাড়ে ছুটছেন। এমনিতে বাঙালির পায়ে তলায় যে সর্ষে ফুল রয়েছে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। একটু সুযোগ পেলেই ব্যাগপত্তর গুছিয়ে মানুষ কোথা থেকে ঘুরে আসতে মুখিয়ে থাকেন। এদিকে এখন যা গরম পড়ছে সেখানে অনেকেই কম বাজেটের মধ্যে থেকে দিঘা বা পুরী ঘুরতে যেতে উদ্যত হচ্ছেন।
আপনিও কি এই গরমের মধ্যে দিঘা ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন? হোটেল বুক করে ফেলেছেন বা বুক করবেন ভাবছেন? তাহলে সাবধান হয়ে যান। এবার থেকে আর দিঘায় গিয়ে সহজে রুম পাওয়া কিন্তু হবে না। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফের বিস্ফোরণকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্ত দুজন দিঘার হোটেলেই বেশ কয়েকদিন ছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে ঘিরে দিঘা সহ সমগ্র বাংলায় বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এদিকে এহেন ঘটনার পর নতুন করে যেন টনক নড়েছে দিঘা প্রশাসনের। এবার থেকে দিঘায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের থাকার ওপর নজরদারি চালানোর জন্য আসরে নামল পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ। এবার নিউ দিঘা থেকে শুরু করে ওল্ড দিঘা সহ বেশ কিছু জায়গায় থাকা হোটেলগুলিতে নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। দুজন অভিযুক্তকে আটক করার পর থেকে দিঘার হোটেলগুলিকে সতর্ক করে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সাফ সাফ জানিয়েছে, পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাই না করে কোনও পর্যটককেই আর হোটেলে থাকতে দেওয়া যাবে না।
দিঘায় সহজেই মিলবে না হোটেল
এখন হোটেলে থাকতে হলে পর্যটকদের যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে হোটেল রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। আর হোটেল-রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ সেই নথি পোর্টালে আপলোড করবে। নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলায় সরকারিভাবে ‘অতিথি’ পোর্টাল চালু করা হয়েছে। গত শনিবার দিঘা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অভিজিৎ পাত্রের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল দিঘার হোটেলগুলিতে অভিযান চালায়। কী ভাবে পর্যটকদের তথ্য নথিভুক্ত হচ্ছে, কী ভাবে সেই তথ্যের সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হয়। অভিযোগ, নাকি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে পর্যটকদের দেওয়া পরিচয়পত্রের তথ্য হোটেলের রেজিস্টার খাতায় তোলা হলেও সেই পরিচয়পত্র সঠিক কি না, তা যাচাই করেন না অনেকেই। ফলে হোটেলগুলিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আর পড়ুনঃ প্রস্তুতি শেষ, এই দিনের মধ্যে বেরোবে মাধ্যমিকের রেজাল্ট! জানালেন পর্ষদ সভাপতি
এদিকে এই গরমের আবহাওয়ায় যখন স্বস্তিতে থাকতে দিঘায় ছুটে যাচ্ছেন, সেই সময়ে বড় মন্তব্য করলেন নিউ দিঘার একটি হোটেলের ম্যানেজার জন্মেঞ্জয় প্রহরাজ। তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘পুলিশ হোটেলে এসেছিল। নির্ধারিত অ্যাপের মাধ্যমে আধার কার্ডের বারকোড স্ক্যান করে পর্যটকদের পরিচয়পত্র সম্পর্কে নিশ্চিত হতে বলা হয়েছে। তার পরেই পর্যটকদের হোটেলে থাকার ঘর দেওয়া যাবে। কোনও পর্যটকের দেওয়া তথ্যে গরমিল পাওয়া গেলে তাঁকে হোটেলে বসিয়ে রেখেই সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি থানায় জানাতে বলা হয়েছে।’’