পুলিশের চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতা, হাইকোর্টের রায়ে পুড়ল কপাল! যা অবস্থা নদিয়ার যুবকের

Published on:

high-court-pradip

কলকাতা হাইকোর্টের কোপে চাকরি হারিয়ে রীতিমতো সর্বশান্ত হয়ে গিয়েছেন বাংলার প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক, শিক্ষিকা। ২০১৬ সালের SSC প্যানেলে যতজন চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের সকলের চাকরি হাতছাড়া হয়েছে। কারণ ২০১৬ সালের সেই প্যানেলটাই পুরো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের তরফে। এহেন ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই সকলের মাথায় বাজ ভেঙে পড়েছে। ঠিক যেমনটা আদালতের রায় মাথায় হাত পড়েছে প্রদীপ মজুমদারের।

WhatsApp Community Join Now

এই প্রদীপ মজুমদারের নামও ছিল ২০১৬ সালের SSC প্যানেলে। পুলিশের লাঠি ছেড়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন শিক্ষক হওয়ার। তিনি নদিয়ার বাসিন্দা। শিক্ষকতার চাকরি প্রদীপের স্বপ্নের চাকরি ছিল। শিক্ষকতার চাকরি পাওয়াটা কিন্তু মোটেও মুখের কথা নয়। সেখানে ৮ বছর চাকরি করার পর যখন হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় যে সকলের চাকরি চলে গেছে, সেইসঙ্গে এত বছরের যে বেতন মিলেছিল তা সবটাই এক মাসের মধ্যে বেতন সহ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতের বক্তব্য, অনেক অযোগ্য চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু চাকরি হারাদের মধ্যে অনেকেই বলছেন যে তাঁরা যোগ্য হয়েও চাকরি হারালেন। সেই দলের মধ্যে রয়েছেন এই প্রদীপ মজুমদারও। চাকরি খুইয়ে স্বাভাবিকভাবেই অনেকের মতো তিনিও চোখে সর্ষে ফুল দেখছেন। প্রায় নবছর পুলিশে চাকরি করেছেন। তবে শিক্ষকতার চাকরি ছিল তার কাছে ড্রিম জব। কিন্তু এখন এই ড্রিম জবই হয়ে গেল হাতছাড়া। বর্তমানে তাঁর স্ত্রী অসুস্থ, ভর্তি হাসপাতালে। এদিকে হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই নিজের হকের চাকরি বুঝে নিতে ধর্মতলায় ছুটছেন। এমনকি এখন তিনি স্মৃতির পাতা উল্টে অবধি দেখলেন।

কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে চাকরিহারা প্রদীপ

প্রদীপবাবু জানান, ‘রাত জেগে পুলিশের ডিউটি করেছি। সকালবেলা বাড়িতে ফিরে বই নিয়ে বসেছি। পুলিশের কাজে ছুটিছাটার বড্ড অভাব। তার মধ্যে এসএসসির প্রস্তুতি নিয়েছি। সবই ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎ আদালতের ২৮২ পাতার রায়ে এক লহমায় জীবনটা ওলটপালট হয়ে গেল। বার বার আফসোস হচ্ছে আগের চাকরিটা ছাড়ার জন্য।’

আরও পড়ুনঃ সেমিফাইনালে ওড়িশার কাছে হার, কোন অঙ্কে ফাইনালে উঠবে মোহনবাগান? রইল সহজ হিসেব

প্রদীপ বলেন,  ‘খুব গরিব ঘরের ছেলে আমি। অনেক কষ্ট করে বাবা-মা পড়াশোনা করিয়েছেন। অভাবের তাড়না, আর কিছু একটা করতেই হবে, এই খিদে থেকে পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু, স্বপ্ন তো ছিল শিক্ষক হওয়ার। অনেক কষ্ট করে স্বপ্নকে বাঁচিয়েছি। সংঘর্ষ করেছি। রাতদিন এক করে পড়াশোনা করেছি। বেতনের অসামঞ্জস্যের কথা না ভেবেই পুরনো চাকরি ছেড়েছি। ন্যূনতম দুর্নীতির যোগ আমার সঙ্গে নেই। তবুও অন্যদের সঙ্গে আমিও এখন ভুক্তভোগী।’

সঙ্গে থাকুন ➥