যত সময় এগোচ্ছে ততই জঙ্গলে জঙ্গলে চোরা শিকারীদের রমরমা যেন বেড়েই চলেছে। বিগত কয়েক শতক ধরে শিকারিদের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়েছে। যে কারণে যথেষ্ট অস্বস্তিতে রয়েছে সরকার থেকে শুরু করে বন দপ্তরে কর্মীরা। একের পর এক পশুকে হত্যা করা হচ্ছে। শিং, দাঁত এছাড়া পশুদের চামড়ার জন্য নির্বিচারে চলছে প্রাণী হত্যা। তবে এরই মাঝে বড় কাজ করল বন দফতর, যে সম্পর্কে শুনে ও জেনে চমকে গিয়েছেন সকলে।
এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন যে বন দফতর কী এমন করেছে? তাহলে বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর। কয়েকদিন আগেই জমে থাকা ৫৭ টি হাতির দাঁতের পর এবার হরিণের ৬২ টি শিং পোড়ালেন বাঁকুড়ার বন দফতরের কর্মীরা। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন একদম। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন কেন? জানা গিয়েছে, গতকাল সোমবার বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় গত ৭-৮ বছর ধরে সংগ্রহ করা ৬২টি হরিণের শিংকে পুড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য বন দফতর।
এদিন প্রধান বন সংরক্ষক এস কুলান্দাইভেলের সভাপতিত্বে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার, জেলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ভারতীয় বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন ১৯৭২ এর বিধান অনুসারে একটি বেসরকারী ইনসিনারেটরের মাধ্যমে অপারেশনটি পরিচালনা করা হয়। বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর ঘুরতে যাননি এমন কেউ হয়তো আর বাকি নেই। এখানকার বিভিন্ন বাঁধ, সেইসঙ্গে হরিণদের দেখতে রাজ্যের কোনা কোনা থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন। মুকুটমণিপুরের কাছে বনপুখুড়িয়ায় হরিণ উদ্যান-সহ বাঁকুড়ার জঙ্গলে প্রচুর হরিণ রয়েছে।
বিশেষত হরিণের মধ্যে লড়াইয়ের সময় শিংগুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় যা বনে কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। এরপরে বন দফতরের আধিকারিকরা টহলদারি সময়ে শিং তুলে আনেন। সেইসঙ্গে প্রাণীর দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহার বা বিক্রি করা অবৈধ এবং তাই এগুলি যথেষ্ট সময় পরে ধ্বংস করা দরকার বলে মত তাঁদের।এদিন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শিংগুলিকে একটি ব্যক্তিগত ইনসিনারেটরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং তাদের সকলকে অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। রাজ্য বন দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের হুমকি থেকে পশুদের রক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ।