কনফার্ম টিকিট থাকা স্বত্বেও দাঁড়িয়ে সফর! ২ লাখ টাকা জরিমানা রেলের

Published on:

train-man

কলকাতাঃ ট্রেন দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। প্রত্যেকদিক দেশে কয়েক হাজার ট্রেন যাতায়াত করে, আর সেই ট্রেনে সওয়ার হয়ে যাত্রীরা যে যার গন্তব্যে পৌঁছে যান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একদিকে যেমন রেল আপগ্রেড হচ্ছে, যাত্রী সাধারণক আরও ভালো পরিষেবা দিচ্ছে, ঠিক তেমনই রেলের ভূমিকায় সন্তুষ্ট রেল যাত্রীরাও। কিন্তু সব জিনিসেরই খারাপ, ভালো মন্দ সবই আছে যেমন তেমন রেলের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

যতই আধুনিক ট্রেন আসুক না কেন, আপগ্রেড হোক না কেন কিন্তু কনফার্ম সিট না থাকা, ভালো খাবার না পাওয়া, বাথরুম পরিষ্কার না থাকা ইত্যাদি ইত্যাদি জিনিস নিয়ে মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। আর রেলের গাফিলতির চরম শিকার হতে হল এক বৃদ্ধকে, যিনি কিনা এক মাস আগে টিকিট কেটেও টানা ১২০০ কিমি পথ দাঁড়িয়ে অতিক্রম করলেন বলে খবর।

আর এর জন্য ক্রেতা আদালত রেলকে ভর্ৎসনা করে ভুক্তভোগী বৃদ্ধকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আর ক্ষতিপূরণের পরিমাণ শুনলে আপনিও হয়তো আকাশ থেকে পড়বেন। এই মামলায় ক্রেতা বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারপার্সন মনিকা শ্রীবাস্তব, সদস্য ডঃ রাজেন্দ্র ধর এবং সদস্য রশ্মি বনসলের বেঞ্চ রেলকে জরিমানা করেছে। আদালত অভিযোগকারীকে সুদ সহ ১.৯৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছে, মানুষ যাতে সুবিধার সঙ্গে রেলে ভ্রমণ করতে পারে তার জন্য টিকিট কাটে। কিন্তু ভ্রমণের দিন কনফার্ম টিকিট থাকা সত্ত্বেও যদি তাঁকে সিট ছাড়াই হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়, তাহলে তাঁর কত যে অসুবিধা হয়েছে সেটা কল্পনারও অতীত।

যদিও ঘটনাটি এখনকার সময়ের নয়। এর জন্য আপনাকে পিছিয়ে যেতে হবে ২০০৮ সালে। ২০০৮ সালের ১৯ জানুয়ারি বিহারের দ্বারভাঙা থেকে দিল্লি যাওয়ার জন্য স্লিপার ক্লাসের টিকিট বুক করেছিলেন এক বৃদ্ধ। ওই বৃদ্ধ আদালতকে জানান যে তাঁর কোচ এস-৪-এ ৬৯ নম্বর আসন বরাদ্দ করা হয়েছিল।এরপর নির্ধারিত দিন অনুযায়ী সময়মতো দ্বারভাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছান বৃদ্ধ এবং কোচ এস৪ এ চড়েন। সেখানে পৌঁছে তিনি দেখেন, তাঁর সিটে অন্য আর একজন বসে রয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি কোচের টিটিইর সঙ্গে যোগাযোগ করলে টিটিই জানান যে তার আসনটি আপগ্রেড করা হয়েছে। বি-১ কোচের ৩৩ নম্বর আসনে বসতে হবে তাঁকে। এরপর ঘটনা আরও নাটকীয় মোড় তখন নেয় যখন ওই বৃদ্ধ ছাপরা স্টেশন আসার পর বি-১ কামরায় পৌঁছে দেখেন, টিটিই ওই আসনটি অন্য একজনকে দিয়েছে। এ নিয়ে টিটিইর সঙ্গে কথা কাটাকাটি অবধি হয় বৃদ্ধের।

WhatsApp Community Join Now

আরও পড়ুনঃ ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা! বিশ বাঁও জলে সিকিম রেল লাইনের কাজ, আতঙ্কে শ্রমিকরা

এরপর শুনানি চলাকালীন রেল ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের সামনে এটা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয় যে আসন আপগ্রেডের বিষয়টি বৃদ্ধকে জানানো হয়েছে। রেলের তরফে আদালতের সামনে যুক্তি খাড়া করেছিল যে বৃদ্ধ যাত্রীটি সময়মতো সিটে পৌঁছতে পারেননি, তাই ভাড়া বাড়িয়ে অন্য যাত্রীকে সিট দেওয়া হয়েছে। যদিও শেষ রক্ষা হয় না রেলের, আদালতের তরফে বৃদ্ধকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় রেলকে।

সঙ্গে থাকুন ➥
X