শুধুমাত্র চা বিক্রি করে মাস গেলে ৬ লক্ষ টাকা উপার্জন করা সম্ভব! উত্তর হ্যাঁ, আর এমনটাই প্রমাণ করে দিয়েছে ভারতের এক যুবক। চা খেতে কে না ভালোবাসে। চা মানেই সকলের কাছে এক আলাদাই ইমোশন। কেউ লাল চা খেতে ভালোবাসে তো কেউ আবার দুধ চা খেতে ভালোবাসে, এছাড়া চায়ের আরও নানা ভেরিয়েন্ট তো আছেই। পাড়ার রকে বসে চা সহযোগে আড্ডা হোক বা বাড়িতে বসে কোনও আনন্দ উদযাপন, চা ইজ মাস্ট। কিন্তু এই চা বিক্রি করেই কিনা মাসে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিল যুবক।
শুনতে অবাক লাগলেও এটাই দিনের আলোর মতো সত্যি। ছেলেটির নাম হল রেভান শিন্দে। সে মহারাষ্ট্রের পুনের পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় শহরের বাসিন্দা । সে শুরুর দিকে চৌকিদার হিসেবে কাজ করতেন। বেতন খুব বেশি অ্যা হলেও সংসার চালানোর মতো খরচ উঠে আসছিল তাঁর। ভালোই চলছিল সবকিছু, কিন্তু আচমকাই একদিন যে কোম্পানিতে সে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতে সেটি বন্ধ হয়ে যায় এবং তিনি চাকরি হারান। অকুল পাথারে পরে সেভান। এরপরে হার না মেনে নিজের একটি ক্যাফে খোলেন। কিন্তু করোনা-লকডাউনের কারণে সেটি বন্ধ রাখতে হয়।
এরপরেও কিন্তু তিনি ভেঙে পরেন না। এরপরেই নিজের একটি স্টার্টআপ খোলেন রেভান। আর এই সিদ্ধান্তই তাঁর জীবন একদম পাল্টে রেখে দেয়। তিনি যে স্টার্টআপটি শুরু করেন তার নাম হল ‘চলতা বোলতা টি’। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আর এই স্টার্টআপের দরুণ সে মাস প্রতি এখন লাখ লাখ টাকা আয় করছে। শুধুমাত্র কিনা চা বিক্রি করে। এখন রেভানের নাম পুনের মানুষের মুখে মুখে ঘোরে। লকডাউনের সময়ে তার ‘ক্যাফে ১৮’ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রেভানের মাথায় এক ধাক্কায় ১৩ লাখ টাকার ঋণের বোঝা এসে পড়ে। তবে জীবন যুদ্ধে হার না মেনে তিনি নতুন করে সবকিছু শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।
হিন্দিতে একটা কথা আছে, সেটা হল ‘টাপরি চায়ওয়ালা’, সেভানও সেই কাজটিই করে। ২০২০ সালে ২০ কাপ দিয়ে এই ব্যবসা শুরু হয় রেভানের। পরে ৫০ থেকে ১০০ কাপ চায়ের জন্য ডাক আসতে থাকে। প্রথম দিকে সে পথচারীদের বিনামূল্যে চা পরিবেশন করতেন, কিন্তু পরে লোকেরা এর স্বাদ পছন্দ করতে শুরু করে। এখন সে শতাধিক অফিসে চা সরবরাহ করে। এখন তাঁর হেল্পিং হ্যান্ড ১০ জন। প্রতিদিন প্রায় ৭০ লিটার চা তৈরি করতে হয় বলে জানিয়েছে রেভান।