ভারতের টেলিকম সেক্টরে যেদিন থেকে মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স জিও প্রবেশ করেছে সেদিন থেকে রীতিমতো ঝড় বয়ে গেছে। ২০১৬ সালে ভারতে রিলায়েন্স জিও লঞ্চ করেছিল মুকেশ আম্বানি। এরপর থেকেই দেশের বড় বড় টেলিকম সংস্থা যেমন Airtel, BSNL, Vodaphone, Idea-র বাজার রীতিমতো মার খেতে শুরু করেছে। সর্বোপরি ভারতী এয়ারটেল রীতিমত অস্তিত্ব সংকটে ভুগতে শুরু করেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটা কথাতেই নাকি রীতিমতো ঘুরে দাঁড়ায় এয়ারটেল। শুনে চমকে গেলেন তো? কিন্তু এটাই সত্যি। আর এমনই জানিয়েছেন খোদ ভারতী গরুপের ফাউন্ডার সুনীল ভারতী মিত্তল। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটা সাক্ষাতই নাকি যথেষ্ট ছিল আবার সবকিছু আগের মতো ঠিক করার।
২০১৮ সালে বিরাট বদল
২০১৬ সালে যখন জিও লঞ্চ হয় তখন জিও বিনামূল্যে ভয়েস ও ডেটা পরিষেবা দিচ্ছিল। আর সেটাই রীতিমতো মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এয়ারটেলের। সুনীল মিত্তল জানিয়েছেন, ‘রিলায়েন্স জিও বিনামূল্যে ভয়েস ও ডেটা পরিষেবা দিচ্ছিল। এছাড়াও টেলিকম নিয়ন্ত্রকের অনেক সিদ্ধান্তের বিরূপ প্রভাব পড়েছে এয়ারটেলের মতো পুরনো টেলিকম সংস্থাগুলির উপর। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলাম। আমি তখন জিএসএমএ’র প্রেসিডেন্ট ছিলাম এবং ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতির পদ থেকে সবেমাত্র বেরিয়ে এসেছি । আমি মাঝে মাঝে প্রধানমন্ত্রীকে ডব্লিউটিও, জি-২০ এবং অন্যান্য বিষয়ে ব্রিফ করেছি। আমি তার সাথে ভারতীয় টেলিকম শিল্প সম্পর্কে কথা বলেছি। আমি তাকে বলেছিলাম যে জিনিসগুলি খুব খারাপ দিকে এগোচ্ছে এবং পরিস্থিতি খুব উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে।’
২০১৬ সালে টেলিকম বাজারে প্রবেশ করা জিও বিনামূল্যে ভয়েস এবং ডেটা পরিষেবা দিচ্ছিল। একই সময়ে, ট্রাই এমন অনেক সিদ্ধান্তও নিয়েছিল যা মিত্তল মনে করেছিলেন যে একটি পক্ষকেই শুধুমাত্র সাহায্য করছে।
ঠিক কী বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা স্মরণ করে মিত্তল বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, “আমি বাজারে লড়াই করতে পারি, কিন্তু আমি সরকারের সাথে লড়াই করতে পারি না”। তিনি সেইসময় আমাকে বলেছিলেন, ‘এই সরকার কোনো এক পক্ষের দিকে ঝুঁকবে না। দেশের জন্য যা ভালো তাই করা হবে। বাজারে মারামারি করছেন। এ বিষয়ে আমার কোনো মতামত নেই। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন যে, সরকার কোনো পক্ষ নেবে না।’ আর সেটাই আমার জন্য যথেষ্ট ছিল। আমি ঘুরে দাঁড়ালাম এবং তাকে ধন্যবাদ জানাই। আর এই সাক্ষাৎই এয়ারটেলের জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট ছিল।’ গত ২৭ মে এয়ারটেলের বাজার মূলধন ছিল ১০০ বিলিয়ন ডলার।