সকল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ১ জুলাই থেকে দেশজুড়ে আজ থেকে চালু হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা-সহ অপরাধমূলক তিন নতুন আইন। এবার থেকে আর আইপিসি নয়, এবার এই ইন্ডিয়ান পেনাল কোড অর্থাৎ ভারতীয় দণ্ডবিধির পরিবর্তে কার্যকর হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা। এছাড়া, ১৮৯৮ সালের ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট, ফৌজদারি ধারার পরিবর্তে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ১৮৭২ সালের ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট, ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের বদলে ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম, এই ৩টি অপরাধমূলক নতুন আইন আজ থেকে গোটা দেশে কার্যকর হল।
যদিও এটকিছুর মাঝেও বাংলা সহ দেশের নানা জায়গায় হিংসা, হানাহানি থামার নামই নিচ্ছে না। যে কারণে ফের আসরে নামলেন বিজেপি বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। উপর নির্বাচনের আগে নতুন করে রাজ্যপাল সিভিক আনন্দ বোসের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু। সেইসঙ্গে ৩৫৫ ধারা জারি করতে বললেন বিরোধী দলনেতা। বললেন, ‘৩৫৫ ধারা জারি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে পুলিশ কেড়ে নেওয়া হোক’। এদিকে শুভেন্দুর এহেন মন্তব্যকে ঘিরে সমগ্র বাংলায় নতুন করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।
বড় দাবি শুভেন্দুর
চোপড়া থেকে শুরু করে কোচবিহার, একের পর এক জায়গার পরিস্থিতি রীতিমতো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আইন আবার মানুষ নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন। আবার কিছু ঘটনার পিছনে সরকারের অঙ্গুলিহেলনেরও অভিযোগ এনেছেন শুভেন্দু। যে কারণে অবিলম্বে বাংলায় ৩৫৫ ধারা জারি করার পক্ষে সওয়াল করেছেন শুভেন্দু।
সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কোচবিহারে দিবালোকে বাসে ডাকাতি এবং চোপড়ায় সালিশি সভায় পুরুষ-মহিলাকে মারধরের ঘটনায় উত্তাল বাংলা। এদিকে এই দুই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু বললেন, ‘‘শুধু কোচবিহার বা চোপড়ার ঘটনাই নয়, শাসকের মদতে প্রায় প্রতিদিনই একটার পর একটা ঘটনা ঘটেই চলেছে। রাজ্যে কোনও আইনের শাসন নেই। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপালের উচিত অবিলম্বে কেন্দ্রের কাছে এ ব্যাপারে লিখিতভাবে জানানো।
শুভেন্দু আরও বলেন, ‘যে কোনও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ার ভুক্ত। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তারা শুধু রিপোর্ট চাইতে পারে। আমরা বলছি না যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থনৈতিক কিংবা প্রশাসনিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হোক। নির্বাচিত সরকার ২০২৬ সাল পর্যন্তই থাকুক। মুখ্যমন্ত্রীও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্তই থাকুন। কিন্তু রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার যা পরিস্থিতি তাতে অবিলম্বে সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপালের উচিত কেন্দ্রকে অবিলম্বে ৩৫৫ ধারার মাধ্যমে পুলিশি ব্যবস্থা যাতে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রণ করে সে ব্যাপারে কেন্দ্রকে আর দেরি না করে এবার লিখিতভাবে সুপারিশ করা।
রাজ্যপালের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ শুভেন্দু?
এরপরেই শুভেন্দু এমন এক মন্তব্য করেছেন যা শোনার পর সকলেই ভাবতে শুরু করেছেন যে তাহলে কী রাজ্যপালের ভূমিকায় তিনি ক্ষুব্ধ? শুভেন্দু বলেন, ‘বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে বিচার ব্যবস্থা যেভাবে রাজ্যের গণতন্ত্র রক্ষায় পদক্ষেপ নিচ্ছে তা প্রশংসনীয়। কিন্তু আজ আমি মনের অত্যন্ত দুঃখের জায়গা থেকে বলছি যে, রাজ্যপালের উদ্যোগ ভাল, কিন্তু I am sorry to say , সাংবিধানিক পদে থেকে অনেকেরই যে ভাবে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা কেউ কেউ নিচ্ছেন না। বর্তমানে রাজ্যের বেহাল আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি যা তাতে রাজ্যপালের উচিত বাংলায় ৩৫৫ কার্যকর করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের কাছে দরবার করার সময় এসেছে।