কলকাতাঃ নিজের স্বপ্নের গাড়ি, বাড়ি হোক এটা তো কমবেশি সকলেই চান। কিন্তু চাইলেই তো আর সব পাওয়া যায় না। গাড়ি, বাড়ি কেনা বা কোনো বড় কিছু শুরু করা তো আর চারটি খানিক কথা নয়। থাকতে হয় পকেটের জোর। কিন্তু অনেক সময়েই টাকা থাকে না অনেকের কাছে। অগত্যা লোন নেওয়ার দিকে ঝুঁকতে হয় সকলকে। আপনিও কী আগামী দিনে লোন নেওয়ার কথা ভাবছেন? তাহলে আপনার জন্য রইল জরুরি খবর।
ক্রেডিট স্কোর নিয়মে বদল
এমনিতে আরবিআইয়ের নিয়ম অনুসারে যার বেশি ক্রেডিট স্কোর সে তত তাড়াতাড়ি এবং মোটা অংকের লোন পাবে। কিন্তু এই নিয়ে প্রায়শই RBI- এর কাছে অভিযোগ জমা পড়ছে। এহেন অবস্থায় এবার এই ক্রেডিট স্কোর সিবিল স্কোর নিয়ে বড় সিদ্ধান্তের পথে হাঁটল আরবিআই। জারি করা হল কয়েকটি নির্দেশিকা যা সকলকে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। মোট ৫টি নিয়ম জারি করা হল আরবিআইয়ের তরফে।
১) সিবিল স্কোর চেক করার জন্য গ্রাহককে তথ্য পাঠাতে হবে
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে সমস্ত ক্রেডিট ইনফরমেশন সংস্থাকে বলা হয়েছে, যখনই কোনও ব্যাঙ্ক বা এনবিএফসি কোনও গ্রাহকের ক্রেডিট রিপোর্ট খতিয়ে দেখবে, তখন সেই গ্রাহককে আগে থেকে তথ্য পাঠাতে হবে। এই তথ্য এসএমএস বা ইমেলের মাধ্যমে পাঠানো যেতে পারে। আসলে ক্রেডিট স্কোর নিয়ে অনেক অভিযোগ সামনে আসছিল, যার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।
২) অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের কারণ উল্লেখ করতে হবে
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মতে, যদি কোনও গ্রাহকের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়, তবে এর কারণ জানাতে হবে, বলা ভালো জবাবদিহি করতে হবে। এতে গ্রাহকের পক্ষে বুঝতে সুবিধা হবে কেন তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের কারণগুলির একটি তালিকা তৈরি করা এবং সমস্ত ক্রেডিট প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে হবে।
৩) বছরে একবার গ্রাহকদের বিনামূল্যে ফুল ক্রেডিট রিপোর্ট দেবে
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতে, ক্রেডিট সংস্থাগুলি বছরে একবার তাদের গ্রাহকদের বিনামূল্যে পূর্ণ ক্রেডিট স্কোর প্রদান করবে। এর জন্য, ক্রেডিট কোম্পানিকে তার ওয়েবসাইটে একটি লিঙ্ক পাঠাতে হবে, যাতে গ্রাহকরা সহজেই তাদের বিনামূল্যে সম্পূর্ণ ক্রেডিট রিপোর্ট পরীক্ষা করতে পারেন। বছরে একবার গ্রাহকরা তাদের CIBIL স্কোর এবং সম্পূর্ণ ক্রেডিট ইতিহাস জানতে পারবেন।
৪) ডিফল্ট রিপোর্ট করার আগে গ্রাহককে জানাতে হবে
RBI- র মতে, যদি কোনও গ্রাহক ঋণখেলাপি হতে চলেছেন বলে মনে হয়, তবে সেক্ষেত্রে ডিফল্ট রিপোর্ট করার আগে গ্রাহককে তা জানাতে হবে। ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএমএস/ই-মেইল পাঠিয়ে সকল তথ্য শেয়ার করতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংক, ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে নোডাল অফিসার থাকতে হবে। নোডাল অফিসার ক্রেডিট স্কোর সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করবেন।
৫) ৫-৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হবে
যদি ক্রেডিট ইনফরমেশন কোম্পানি ৩০ দিনের মধ্যে গ্রাহকের অভিযোগ নিষ্পত্তি না করে, তবে তাকে প্রতিদিন ১০০ টাকা জরিমানা গুনতে হবে। অর্থাৎ অভিযোগ যত দেরিতে নিষ্পত্তি হবে, তত বেশি জরিমানা দিতে হবে। ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান ২১ দিন এবং ক্রেডিট ব্যুরো ৯ দিন সময় পাবে। ২১ দিনের মধ্যে ক্রেডিট ব্যুরোকে না জানালে ব্যাঙ্ক ক্ষতিপূরণ দেবে। ব্যাংকের নোটিশের ৯ দিন পরও অভিযোগ নিষ্পত্তি না হলে ক্রেডিট ব্যুরোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।