কলকাতাঃ মানুষের নানা বিষয় নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। প্রত্যেকেরই মনে নানা ধরনের প্রশ্ন চাগাড় দেয়। যেমন কোন দেশ বড়? কে প্রথম আগুন জ্বালানো আবিষ্কার করে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেকের মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, আর সেটা হল বিশ্বের মধ্যে কোন মুসলিম দেশ সবথেকে ধনী? আপনার মাথাতেও কি এই প্রশ্ন এসেছে? তাহলে জেনে নিন উত্তর।
কোন মুসলিম দেশ সবথেকে ধনী
অনেকেই হয়তো জানেন না যে ইসলাম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম এবং বিশ্বব্যাপী প্রায় ১.৯ বিলিয়ন মানুষ এই ধর্ম অনুসরণ করেন। বিশ্বে ৫০টিরও বেশি দেশ রয়েছে যেখানে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হল সৌদি আরব, তুরস্ক, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই দেশগুলি নিয়ে সবসময়েই গোটা বিশ্বের মানুষ আলোচনা করেন। এর মধ্যে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বিশেষভাবে ধনী দেশ হিসেবে দেখা হয়। অপরিশোধিত তেলের মজুদ থাকার কারণে উভয় দেশই প্রভাবশালী, তবে যদি আমরা ধনী মুসলিম দেশগুলির কথা বলি তবে কাতার সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের চেয়ে এগিয়ে।
জানলে চমকে উঠবেন, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে বিপুল তেল মজুদ থাকার কারণেও কিন্তু এই দুই দেশ ধনী নয়। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। এই দুই দেশকে পিছনে ফেলে সবথেকে ধনী মুসলিম দেশের তকমা ছিনিয়ে নিয়েছে কাতার। এখানকার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান বেশ ভালো। সম্প্রতি এক রিপোর্টে এই দাবি করা হয়েছে।
রিপোর্টে চাঞ্চল্য
সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। আর এই রিপোর্ট দেখে সকলের চোখ কপালে উঠেছে। TEMPO.CO প্রকাশিত Universitymagazine.ca রিপোর্ট অনুযায়ী, সবচেয়ে ধনী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কাতার। কাতারের জনসংখ্যা প্রায় ১.৭ মিলিয়ন এবং ২০১১ সালে কাতারের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ৮৮,৯১৯ ডলার (যা কিনা ভারতীয় মুদ্রা ৭৪ লক্ষ)। এর ফলে কাতারকে বিশ্বব্যাপী দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির মধ্যে গণনা করা হয়। দেশের অর্থনীতি মূলত টিকে রয়েছে এর প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল এবং পেট্রোকেমিক্যালস রপ্তানির উপর নির্ভর করে।
এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে নাম রয়েছে কুয়েতের। কুয়েতের জনসংখ্যা ৩.৫ মিলিয়ন এবং ২০১১ সালে দেশটির মাথাপিছু জিডিপি ছিল ৫৪,৬৬৪ ডলার। কুয়েতে প্রায় ১০৪ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের মজুদ রয়েছে। যে কারণে এই দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী। শিপিং শিল্প এবং আর্থিক পরিষেবাগুলিও কুয়েতের অর্থনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বছরের পর বছর ধরে।
এরপর তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রুনাই। ২০১০ সালে ব্রুনাইয়ের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ৫০,৫০৬ ডলার। এই দেশ তৃতীয় ধনী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে পরিণত হয়েছে। ব্রুনাইয়ের মূল সম্পদ তার তেল মজুদ এবং প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে আসে।
আরবের স্থান কততে
এই তালিকায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE)। ২০১১ সালে মাথাপিছু জিডিপি ৪৮,২২২ ডলার (প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা) সহ চতুর্থ ধনী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে UAE। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতিও তেল ও গ্যাস শিল্পের উপর ভিত্তি করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানিও সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। এরপরই পাঁচ নম্বরে রয়েছে ওমান। ২০১১ সালে ওমান এর মাথাপিছু জিডিপি ছিল ২৮,৮৮০ ডলার।