কলকাতাঃ কথাতেই আছে, ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। শুধু তাই নয়, মনে জেদ আর কিছু করে দেখানোর লক্ষ্য থাকে তাহলে সবকিছুই যে সম্ভব তা আবারও প্রমাণ করে দিলেন মালদার বাসিন্দা অভিজিৎ রায়। বর্তমান সময়ে তাঁর রেজাল্ট নিয়ে সমগ্র বাংলা তথা দেশজুড়ে আলোচনা হচ্ছে। একদম ছাপোষা এবং সংগ্রামী পরিবার থেকে উঠে আসা অভিজিতের জীবনটা কিন্তু খুব একটা সহজ ছিল না। তারপরেও সকল প্রতিকূলতাকে হার মানিয়েও যে জীবনে সফল হওয়া যায় তা আবারও প্রমাণ করে দিলেন মালদার অভিজিৎ। এখন আপনিও নিশ্চয়ই ভাবছেন কী হয়েছে? তাহলে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির ওপর।
অভিজিৎ রায়ের সংগ্রামের কাহিনী
IIT খড়গপুরে সুযোগ পাওয়া সবার পক্ষে কিন্তু সম্ভব হয় না। কিন্তু সব অসাধ্য সাধনকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে নিজের পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছেন অভিজিৎ। অভিজিৎ রায় জয়েন্ট এন্ট্রান্স জেই-তে ১৯১ তম স্থান অর্জন করেছেন। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। অনেকেই আছেন যারা মুখে সোনার চামচ নিয়ে জন্মান, কিন্তু জীবনে যে সাফল্য হবেন তার কোনও গ্যারেন্টি নেই। অথচ টাকার অভাব, নানারকম সংগ্রামের মধ্যে দিয়েও দুর্দান্ত সফল অর্জন করে এখন বাংলার যুবক অভিজিৎ রায় আইআইটি খড়গপুরে ভর্তি হয়েছেন।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল অভিজিৎ
সামাজিক মাধ্যমে এখন অনুপ্রেরণামূলক গল্প ভাইরাল হচ্ছে অভিজিতের। অভিজিৎ রায় দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার বাবা নিখোঁজ, বাড়িতে রয়েছে মানসিকভাবে অসুস্থ মা এবং বৃদ্ধ দাদু। অভিজিতের দাদু পরিবারের খরচ চালানোর জন্য একটি ই-রিকশা চালান এবং তারা একটি ছোট বাড়িতে থাকেন। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত জিনিস জোগাড় করতে গিয়েই রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় রায় পরিবারকে। সেখানে এরকম পরিবারের ছেলের এরকম দুর্দান্ত রেজাল্ট আর খড়গপুর আইআইটিতে ভর্তি হওয়া সত্যিই স্বপ্নের সমান।
কঠিন পরিস্থিতিতেও অভিজিতের সাহস ও সংকল্প দৃঢ় ছিল। প্রতিকূলতার মুখে পড়াশোনার প্রতি অভিজিতের নিষ্ঠা তাঁর আশার আলো হয়ে উঠেছিল। দামি কোচিং সেন্টার বা পড়াশোনার উপকরণ না পেলেও তিনি কেবল তার দৃঢ় সংকল্প এবং সংস্থানগুলি ব্যবহার করেছিলেন। তিনি জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সামিনেশনে (জেইই) ১৯১ তম স্থান অর্জন করেছেন, সেসঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়গপুরে ভর্তি হয়েছেন।
সকলের সমর্থনে আত্মবিশ্বাসী অভিজিৎ
অভিজিতের সাফল্য তাঁর সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং বন্ধুরা তার কৃতিত্বের প্রশংসা করেছেন এবং তার পরিবারকে সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছেন। বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি অভিজিৎকে তার পড়াশোনা এবং জীবনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে সাহায্যের প্রস্তাবও দিয়েছে।