আধার কার্ড…একটা জরুরি নথি। বর্তমান সময়ে এই আধার কার্ড ছাড়া একটা কাজও হয় না। শিশুর জন্ম থেকে শুরু করে হাসপাতাল, স্কুল, কলেজে ভর্তি সহ নানা কাজে এই আধার কার্ডের দরকার পড়ে। তবে মানুষের পাশাপাশি এবার জমিরও ‘আধার কার্ড’ হবে। শুনে চমকে গেলেন তো? ভাবছেন জমির আধার কার্ড জিনিসটা আবার কী? তাহলে বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির ওপর।
এবার জমির ‘আধার কার্ড’
সাধারণ মানুষের পরিচয় জানতে যেমন আধার কার্ড রয়েছে, এবার তেমনই জমির নিজস্ব পরিচয়ের জন্যেও থাকবে ‘আধার কার্ড’! এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভূ আধার কার্ড’। চলতি বছরের বাজেট অধিবেশনে এই ভূ রেকর্ড ডিজিটাইজেশনের ব্যাপারে একটি প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। তিন বছরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে খবর। আর এই বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে জমির মালিকরা উপকৃত হবেন। যেমন আধার কার্ড আসার ফলে দেশে অনেক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে, এবার তেমনই এই ভূ আধার কার্ডও দেশে ঝড় তুলবে বলে মনে হচ্ছে।
ভূ আধার কী?
গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে ভূমি সংস্কারের জন্য সরকার ২০২৪-এর বাজেটে বেশ কয়েকটি বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় গ্রামীণ এলাকায় জমির জন্য ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা জমির আধার কার্ড জারি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শহরের জমি ডিজিটালাইজেশনের প্রস্তাবও করা হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী তিন বছরে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে রাজ্য সরকারকে আর্থিক সহায়তা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। এতে করে যেমন জমি সংক্রান্ত বিরোধও শেষ হবে এবং মালিকানাও স্পষ্ট হবে।
ভূ-আধারের আওতায় গ্রামাঞ্চলে যা কিছু জমি রয়েছে সেগুলি ১৪ ডিজিটের একটি ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর পাবে। এই প্রক্রিয়ায় জমির সনাক্তকরণ নম্বরসহ তার ম্যাপিং, জরিপ, মালিকানা এবং কৃষকদের রেজিস্ট্রেশন করা হবে। এতে করে কৃষকরা খুব সহজেই কৃষিঋণ পেয়ে যাবেন। এছাড়া অন্যান্য কৃষি সুযোগ-সুবিধাও সকলে সহজেই পেতে পারবেন।
কীভাবে কাজ করবে ভূ আধার কার্ড
এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন যে এই ভূ আধার কার্ড কীভাবে কাজ করবে ? শহরাঞ্চলের জমির রেকর্ড জিআইএস ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ডিজিটালাইজড করা হবে। এতে প্রথমে জিপিএস প্রযুক্তির সাহায্যে জমির জিওট্যাগিং করা হয়। সমীক্ষকরা তখন সশরীরে যাচাই করে জমির সীমানা পরিমাপ করেন। এটি করার পরে, রেকর্ডগুলি সংগ্রহ করা হবে। এরপর এটি ল্যান্ড রেকর্ডস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে দায়ের করা হবে। সিস্টেমটি তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্লটের জন্য একটি ১৪-সংখ্যার ভু-আধার নম্বর তৈরি করে দেবে। এই আধার নম্বরটি ডিজিটাল রেকর্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। ফলে সহজেই যে কেউ ভূ আধার কার্ড পেয়ে যাবেন।