কলকাতাঃ ফের একবার শিরোনামে উঠে এল হাওড়া স্টেশন। এমনিতে এই রেল স্টেশন এশিয়ার মধ্যে অন্যতম বড় এবং ব্যস্ততম রেল স্টেশন। প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষ এই রেল স্টেশনের ওপর ভর করে যে যার গন্তব্যের দিকে ছুটে চলেছেন। প্রত্যেকবারই কিছু না কিছু বিষয়ের ওপর এই রেল স্টেশন নজির গড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। এবার এই হাওড়া স্টেশনের মুকুটে এমন এক নয়া পালক জুড়ল যা হয়তো কেউ ভাবতেও পারেননি।
হাওড়া স্টেশনের মুকুটে নয়া পালক
প্রত্যেকদিন কয়েক লক্ষ মানুষ এই রেল স্টেশনের ওপর দিয়ে হাঁটাচলা করেন। আর যখন এত সংখ্যক মানুষ হাঁটাচলা করলে স্টেশন চত্ত্বর নোংরা হওয়াটাই স্বাভাবিক। প্রতিদিনের নিরিখে এত পরিমাণে নোংরা সাফ করতে যথেষ্ট জলের দরকার পড়ে। এমনিতে বিভিন্ন জায়গায় জলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সেখানে স্টেশন পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে কয়েকশো লিটার জল অপচয় নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছিলেন। তবে এসবের মাঝেই রেল কর্তৃপক্ষ এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা নিয়ে এখন সর্বত্রই আলোচনা হচ্ছে। পূর্ব রেলের হাওড়া স্টেশন অভিনব ভাবে বৃষ্টির জল সংগ্রহের ব্যবস্থা চালু করেছে।
জানলে অবাকে হবেন, স্টেশনটি বছরে প্রায় ৭৩,০০,০০০ লিটার বৃষ্টির জল ভূগর্ভস্থ জলের থেকে পুনর্ব্যবহার জল সংগ্রহ করে। স্টেশনটি এই উন্নত সিস্টেমের মাধ্যমে বার্ষিক প্রায় ৯৭,৫২৪.৫ ঘনমিটার বৃষ্টির জল সংগ্রহ ও পুনঃব্যবহার করে।
কীভাবে জল সংগ্রহ করা হয় জানেন
একটি ক্ষতিগ্রস্থ পিভিসি ট্যাঙ্ককে একটি রিচার্জ পিটে রূপান্তরিত করা হয়েছে, যা বৃষ্টির জলকে ভূগর্ভস্থ জল পুনরায় পূরণ করতে দেয়। এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, অন্যান্য বড় রেল স্টেশনেও এই মডেল চালু করতে চাইছে পূর্ব রেল। হাওড়া স্টেশনের মোট ছাদের আয়তন ৭৮,৮৩১.৬ বর্গমিটার। এর মোট আয়তনের ৯০% এরও বেশি শেড এবং ছাদ রয়েছে। অবশিষ্ট প্রবাহিত বৃষ্টির জল, যার পরিমাণ বছরে ৯০,২২৪,৫৪০ লিটার, তা বর্জ্য শোধনাগারের (ইটিপি) একটি ট্যাঙ্কে পরিচালিত হয়। এরপর এই জলটি স্টেশন ওয়াশিং, ট্র্যাক পরিষ্কার এবং এপ্রোন ধোয়ার জন্য পুনরায় ব্যবহার করা হয়। হাওড়া স্টেশনের বৃষ্টির জল সংগ্রহ ব্যবস্থার সাফল্য শহুরে পরিকাঠামোয় উদ্ভাবনী পরিবেশগত অনুশীলনের সম্ভাবনাকে তুলে ধরে। অন্যান্য স্টেশনেও খুব শীঘ্রই এই ব্যবস্থা চালু করা হতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে।