আসানসোলঃ যত সময় এগোচ্ছে ততই বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা। SSC নিয়োগে দুর্নীতি, টেট দুর্নীতি সহ একাধিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে গরম হয়ে রয়েছে বাংলার আবহাওয়া। যদিও এসবের মাঝেই এমন এক ঘটনা প্রকাশ্যে উঠে এসেছে যারপরে সকলেই পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ, সর্বোপরি বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। ঘটনাটি আসানসোলের। এখানে এমন একটি সরকারি স্কুল রয়েছে যেখানে রয়েছেন মাত্র একজন শিক্ষক। তিনিই পড়ুয়াদের পড়াচ্ছেন তো আবার তিনিই স্কুলের টিফিনের ঘন্টা, ছুটির ঘন্টা বাজাচ্ছেন।
স্কুলে মাত্র একজন শিক্ষক
আসানসোলের বিনোদবাদ অবৈতনিক স্কুলে আগে শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ৩ জন। কিন্তু এখন সেই সংখ্যা কমে ১ জনে এসে ঠেকেছে। আর এই একজন শিক্ষকই কিনা স্কুলের যাবতীয় কাজ সারছেন। কারণ বাকি দুজন শিক্ষক বদলি নিয়ে অন্য স্কুলে চলে গিয়েছেন। এরপর একজন শিক্ষিকাকে এই স্কুলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও বেহাল রাস্তা হওয়ার কারণে তিনিও যেতে নারাজ। যে কারণে এখন একাই স্কুলটিকে আগলে রেখেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মধুসূদন পাল।
কী বলছেন শিক্ষক
প্রায় দেড় মাস ধরেই শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে বিনোদবাদ অবৈতনিক স্কুল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মধুসূদন পাল জানান, ‘গত ২১ জুলাই থেকে আমি একাই এই স্কুলটিকে আগলে রেখেছি। এখানে একাই কাজ করছি।’ বর্তমানে এখন তিনিই গোটা স্কুলের অফিশিয়াল ব্যাপার থেকে শুরু করে মিড ডে মিল একা হাতে সামলাচ্ছেন। সেই কথায় আছে না জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ, সবই একা হাতে করছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ ক্লাবগুলো অনুদানের ৮৫০০০ দিতে পারবে না রাজ্য? হাইকোর্টে মামলা ঘিরে জল্পনা
তিনি জানান, ‘শিশু শ্রেণি থেকে ক্লাস ফাইভ অবধি আমার স্কুলে পড়াশোনা হয়। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৩৭ জন। তাঁদের সবার দায়িত্ব আমার। মিড ডে মিল থেকে শুরু করে ১০-১২টা রেজিস্টার আছে সবটা দেখতে হয়।’ নতুন শিক্ষক শিক্ষিকা না আসা অবধি আপাতত একা হাতেই নিজে সব কাজ করে চলেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক দেবাশিস সরকার জানাচ্ছেন, ‘চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসে আমরা এই বিষয়ে কথা বলবো। এই বিষয়ে যাতে দ্রুত সমাধান করা যায় সেটা দেখা হবে।’ স্কুলের মোট দুটি ঘরে পড়ুয়াদের বসান মধুসূদনবাবু। একবার একটি ঘরে পড়ুয়াদের কিছুক্ষণ পড়ান, তারপর অন্য ঘরে কিছুক্ষণ পড়ান। এসবের মধ্যেও সময় বের করে মিড ডে মিলের জোগাড় থেকে শুরু করে রান্নাবান্না করে আসেন।