আরজি কর কাণ্ডের ছায়া জঙ্গিপুরে, বিধায়কের কলেজ থেকে উদ্ধার ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ

Published on:

আরজি কর কাণ্ড নিয়ে এখন তোলপাড় গোটা দেশ। কলকাতার এই ঘটনা যেন দেশের সব ডাক্তারদের আন্দোলনে নামতে বাধ্য করেছে। মেডিকেল কলেজের সেমিনার রুমে এমন নৃশংস ঘটনা হতে পারে বলে কেউ হয়তো কল্পনাও করতে পারেন নি। এখনো এই ঘটনার সব দোষীরা ধরা পড়েনি। এর মাঝেই এই ঘটনার ছায়া দেখা গেল মালদহে। এবার এক ফার্মাসি ছাত্রের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হল কলেজ হোস্টেলের বদ্ধ রুম থেকে। কলেজের তরফে আত্মহত্যা বলে দেখানোর চেষ্টা করা হলেও মৃত ছাত্রের পরিবারের দাবি, তাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ মৃত ছাত্রের শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

WhatsApp Community Join Now

সূত্রের খবর, মৃত ছাত্র তৌহিদ করিম মালদহের ইংরেজবাজার থানার যদুপুরের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর বাবা রেজাউল করিম পেশায় একজন গাড়িচালক। অভাবের সংসারে মেধাবী তৌহিদ যেন জ্বলে উঠছিলেন আশার আলো হয়ে। তাই ছেলে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর যখন ফার্মাসিস্ট পড়ার কথা বলেছিল, তখন বাবা চারদিক থেকে টাকা জোগাড় করে তাকে ভর্তি করেছিলেন জঙ্গীপুরের জাকির হোসেন ইন্সটিটিউট অফ ফার্মাসিতে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে মেধাবী তৌহিদ বাড়ি ছেড়ে হোস্টেলের জীবনে পা দেয়। কিন্তু কে জানতো, হোস্টেল থেকে তাঁর আর বাড়ি ফেরা হবেনা!

কলেজে পা দিয়েই র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিলেন তৌহিদ

মৃত ছাত্র তৌহিদ করিমের পরিবারের অভিযোগ, কলেজে যাওয়ার মাসখানেক পর থেকেই নাকি র‍্যাগিংয়ের কথা শোনা যেত তাঁর মুখে। সেই সময় নাকি ভেঙে পড়তে থাকে মেধাবী তৌহিদ। তবে তার পরিবার তাঁকে বুঝিয়ে শক্ত করার চেষ্টা করে অবিরত। তারপরও হোস্টেলে থেকে যায় সে। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই মৃত্যু হল তৌহিদের। হোস্টেলের বন্ধ কামরা থেকে মিললো তার মৃতদেহ। দেহের উপর আঘাতের চিহ্ন থাকলেও কলেজের তরফে সবটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন তৌহিদের বাবা।

সংবাদমাধ্যমকে জানাতে নিষেধ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ

মৃত ছাত্রের বাবার অভিযোগ, মৃত্যুর আগের দিন ফোনে কয়েকটি জিনিস আনার কথা বলে তৌহিদ। তারপর সেইসব জিনিস নিয়ে হোস্টেলে পৌঁছালে ছেলের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন তিনি। তার আগে নাকি কলেজের তরফে কিছুই জানানো হয়নি। যদিও তারপর কলেজ গোটা ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে। কিন্তু ছেলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে দাবি বাবার। এমনকি তৌহিদের বাবা অভিযোগ করেন যে কলেজের তরফে সংবাদমাধ্যমকে এই বিষয়ে জানাতে বারণ করে। এমনকি, শুরুতে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সব মিলিয়ে, মৃত্যুর পর একদিন কেটে গেলেও ধামাচাপার পর্যায়ে রয়ে গেছে সবটা।

সঙ্গে থাকুন ➥
X