কলকাতাঃ গত রবিবার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের ডুরান্ড কাপের ডার্বি ম্যাচ ছিল। তবে ম্যাচটি আগের দিন অর্থাৎ, শনিবার বাতিল করে দেওয়া হয়। যদিও এই ডার্বি নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। একইসঙ্গে ৯ ই আগস্ট আরজি কর মেডিকেল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর কর্মসূচি ছিল ম্যাচ চলাকালীন। সেই জন্য নিরাপত্তার কারণে দেখিয়ে ম্যাচটি বাতিল করে দেওয়া হয়। এর ফলে দুই দলের সমর্থকরা স্টেডিয়ামের বাইরে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেইমতো রবিবার বিকেল থেকে বিক্ষোভ শুরু হয় ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান সমর্থকদের।
আর এদিনের এই আন্দোলনে যে ব্যক্তি সবার সামনে এসে গেছেন তিনি হলেন মোহনবাগান সমর্থক শিলাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজে মোহনবাগান সমর্থক হলেও এদিনের বিক্ষোভে তিনি একজন ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। আর এই ছবি গোটা বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছে। এরপর অভিনেতা দেবদূত ঘোষ তাকে নিয়ে পোস্ট করেন। ফলে রাতারাতি আরও বিখ্যাত হয়ে ওঠেন শিলাদিত্য। কিন্তু কে তিনি? চলুন তাঁর সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ছোট্ট খাবারের দোকান চালান শিলাদিত্য
কলকাতার হালতু মোড়ের কাছে একটা ছোট্ট খাবারের স্টল দেন শিলাদিত্য। স্টল বলতে একটা টেবিল, ওপরে একটা ছাতা। সেখানেই পোলাও, মাংস, সহ নানা সুস্বাদু খাবার বিক্রি করেন তিনি। তবে শিলাদিত্যর পরিবার কয়েকপুরুষ ধরে মোহনবাগানের কট্টর সমর্থক। তাই এই ছোট দোকান চালিয়েও মোহনবাগানের কোনো খেলা মিস করেন না তিনি। ম্যাচ থাকলেই গ্যালারির প্রথম সারিতে বসে দলের সমর্থনে স্লোগান দেন তিনি। তবে তাঁর দোকানে কিন্তু অনেক ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক নিয়মিত খরিদ্দার। তাই মাঠের বাইরে কারও সঙ্গে ফুটবল নিয়ে কোনও বিবাদ ঘটাতে দেখা যায়নি শিলাদিত্যকে।
কেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন শিলাদিত্য?
এক সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শিলাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন যে সেদিন ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান সমর্থকরা আলাদা আলাদা জটলা করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। আচমকা তার মনে আসে যে একসাথে আন্দোলন করলে তার আওয়াজ আরও বেশি হবে। তাই ওই ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে কাঁধে তুলে নেন তিনি। সেই সময়ে ওই লাল-হলুদ সমর্থকের নামও জানতেন না। পড়ে নাকি ফেসবুক থেকে জানতে পারেন যে কাঁধে নেওয়া ওই যুবকের নাম রোহন গুপ্ত। তবে এই আন্দোলনে শিলাদিত্য যে উদাহরণ তৈরি করেছেন, তা কোনোদিন ভুলবে না বাংলার ফুটবল।