কলকাতাঃ ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাস ঘাঁটলে অনেক উত্থান পতনের গল্প চোখে পড়বে। যেভাবে দিন দিন গরিমা হারিয়েছিল ভারতীয় ফুটবল, তাতে ককরে দেড়শো কোটির দেশে এটা মোটেই গৌরবের বিষয় নয়। তবে তলানিতে যেতে থাকা দেশের এই ফুটবলে ফের একবার যিনি আশার আলো জ্বলিয়েছিলেন, তিনি হলেন সুনীল ছেত্রী। ভারতীয় ফুটবলের একটা বড় অধ্যায় বলা চলে এই ফুটবলারকে। কি করেননি তিনি! কোন বিষয়ে তাঁর অবদান নেই! এগুলো খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বরং, একমাত্র ভারতীয় ফুটবলার হিসেবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লিওনেল মেসির পর নাম আসে তাঁর। তবে সেই অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে কয়েকমাস আগেই। ফুটবলকে চিরতরে বিদায় জানিয়েছেন ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক।
আর সুনীল ছেত্রীর অবসরের পর থেকেই একটা জল্পনা মাঠে মাঠে ঘুরছে, আর সেটা হল – এবার কি ভারতের কোচ হবেন তিনি? কারণ এই মুহূর্তে দেশের যেকোনও খেলায় দেশীয় কোচ রাখার প্রবণতা বাড়ছে। ক্রিকেটের ময়দানে আমরা দেখেছি রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্মণ ও গৌতম গম্ভীরকে। তাই অনেকেই চাইছেন যে সুনীল ছেত্রী এবার ভারতের ফুটবলারদের হেডস্যারের দায়িত্ব পালন করুন। তবে এবার এই জল্পনা শেষ করলেন ভারতের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন নিজেই। তিনি বলে দিলেন তাঁর আগামীর পরিকল্পনার বিষয়ে।
ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ হচ্ছেন সুনীল ছেত্রী?
সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিয়ে সুনীল ছেত্রীকে প্রশ্ন করা হয়। আর এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে তিনি কোনদিনই ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ হতে চান না। কারণ, প্রশিক্ষণ দেওয়ার নাকি কোনও ইচ্ছেই নেই তাঁর মনে। কিন্তু কেন কোচ হতে চাইছেন না সুনীল? এর কারণটিও স্পষ্ট করেন ফুটবলার। তিনি জানান, “আমার কোচ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আমি অত্যন্ত স্বার্থপর এবং আত্মকেন্দ্রিক প্রকৃতির একজন মানুষ। আমি শুধুমাত্র নিজের খেয়ালটুকু রাখতে জানি। একেবারেই দুরদর্শী নই।” আর সেই কারণেই দলের কোচের দায়িত্ব সামলাতে নারাজ সুনীল।
কোচিং যথেষ্ট কঠিন একটি কাজ: সুনীল ছেত্রী
এই সাক্ষাৎকারে কোচিংয়ের বিষয়ে সুনীলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে কোচিং একটি যথেষ্ট কঠিন কাজ। তাঁর কথায়, একজন খেলোয়াড়কে অনুপ্রেরণা দেওয়া সহজ। কিন্তু তিনি মনে করেন যে কোচিং করানোর মধ্যে আরো অনেক কিছু থাকে, যেসব বিষয়ে তিনি মোটেই পারদর্শী নন। এছাড়াও এই সাক্ষাৎকারে মজার ছলে সুনীল বলেন, “প্রত্যেক কোচের উপর যথেষ্ট চাপ থাকে। সেকারণে ওরা তাড়াতাড়ি বুড়োও হয়ে যায়। ভারতের অধিকাংশ ফুটবলারই পাগল। ফলে ২৬ জন ভিন্ন ফুটবলারের আদর্শ মাথায় নিয়ে একটা দল পরিচালনা করা একেবারেই সহজ কাজ নয়। মাথা ঠাণ্ডা রেখে এদের সবাইকে নিয়ে আমাদের চলতে হয়।”