নয়া দিল্লিঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লির মসনদে বসার পর থেকেই ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগানের উপর জোর দিয়েছিলেন। আর প্রধানমন্ত্রীর এই স্লোগানের প্রতিফলন আজকাল বাস্তবে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে অস্ত্র রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারত আজ অনেক দেশের থেকেই এগিয়ে রয়েছে। তথ্য বলছে, গত ১০ বছরে ভারতের অস্ত্র রপ্তানি ৩০ শতাংশ বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের কারণে অনেক দেশ তাদের অস্ত্রভাণ্ডার বাড়ানোর চেষ্টা করেছে। এতে ভারতের রপ্তানি আরও বেড়েছে। ভারত এখন বিশ্বব্যাপী ৯০-এর বেশি দেশে অস্ত্র রপ্তানি করে।
বর্তমানে সরকার বেসরকারি অস্ত্র নির্মাণকারী কোম্পানিগুলোকে সহজে লাইসেন্স দিচ্ছে। আর সরকারের এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী ভারতের অস্ত্র রপ্তানি বৃদ্ধি করেছে। তথ্য বলছে, সরকারী মালিকানাধীন এবং বেসরকারী কোম্পানিগুলি আজকাল অন্যান্য দেশকে গোলাবারুদ, স্নাইপার রাইফেল, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট, ইলেকট্রনিক পণ্য, সাঁজোয়া যান, টর্পেডো, সিমুলেটর, ড্রোন এবং আক্রমণকারী জাহাজ রপ্তানি করছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে কোন দেশ ভারতের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে অস্ত্র কিনছে? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে যে দেশের নাম উঠে এসেছে তা অবাক করার মতো।
ভারতের থেকে কোন দেশ সর্বোচ্চ অস্ত্র কিনছে?
ভারত থেকে অস্ত্র কেনার দেশগুলোর মধ্যে সবার উপরে নাম রয়েছে আমেরিকার। বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ আমেরিকা ভারতের থেকে অনেক ধরণের অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি করছে। এর বাইরে আফ্রিকা ও অন্যান্য দেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও অস্ত্র সরবরাহের দিকেও নজর দিচ্ছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। এছাড়াও, মায়ানমার বহু বছর ধরে ভারতের থেকে অস্ত্র আমদানি করে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ইজরায়েল এবং আর্মেনিয়ার মতো দেশগুলিও ভারতীয় অস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ ক্রেতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এছাড়াও সম্প্রতি, ফিলিপাইনের সঙ্গে ব্রহ্মোস চুক্তি সেরে ফেলেছে ভারত।
ভারতের অস্ত্র রপ্তানি কত বৃদ্ধি পেয়েছে?
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তথ্য দেখলে এটা স্পষ্ট হয় যে গত ১০ বছরে ভারতের অস্ত্র রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতের অস্ত্র রপ্তানি ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এপ্রিল-জুন মাসে প্রতিরক্ষা রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬,৯১৫ কোটি টাকা, যা আগের বছরের ৩,৮৮৫ কোটি টাকা থেকে। এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছিল। গত আর্থিক বছরে ভারত ২১,০৮৩ কোটি টাকার অস্ত্র রপ্তানি করেছিল, যা আগের আর্থিক বছরের তুলনায় ১৫,৯২০ কোটি টাকা অর্থাৎ, ৩২.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।