পালিতঃ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ভারতীয় রেলকে আরো বেশি আধুনিক ও গতিশীল করেছে। ২০১৯ সালে প্রথম বন্দে ভারত যাত্রা শুরু হয়। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে ১৬টি কোচ থাকে, যা সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এই ট্রেনে যাত্রীদের আরামদায়ক ভ্রমণের দিকে বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়েছে। ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, এবং সময়ানুবর্তিতা ভারতীয় রেল ব্যবস্থায় একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তবে এই ট্রেনের বেশ কিছু দুর্ঘটনার খবরও মাঝে মাঝে শোনা গেছে। গোটা দেশে এইসব খবর নিয়ে চর্চাও হয়েছে বিস্তর।
এবার রাজস্থানে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের ট্র্যাকে সিমেন্ট ব্লক দিয়ে বিপজ্জনক ফাঁদ পাতার ঘটনা ঘটল। আর এই ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা দেশ। ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন রেলকর্মীরা রেল ট্র্যাকে একাধিক বড়সড় সিমেন্টের ব্লক দেখতে পান। এই ব্লকগুলি ট্রেনের ট্র্যাকে বিপজ্জনকভাবে রাখা ছিল। এর উপর দিয়ে ট্রেন গেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও হতে পারত বলে অনুমান। তাহলে কি দুর্ঘটনা ঘটানোর জন্যই এমন কাজ করেছে দুষ্কৃতীরা?
ট্রেনের ট্র্যাকে সিমেন্ট ব্লক
গত ২৩ শে আগস্ট ঘটনাটি ঘটে রাজস্থানের পালিতে। ওইদিন রাতে আমেদাবাদ-যোধপুর বাউন্ড বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেই রুট দিয়ে যাচ্ছিল। যদিও ট্রেনটির চালক এবং সহকারী চালকের তৎপরতায় ট্রেনটি নিরাপদে থেমে যায়। একইসঙ্গে বড় ধরনের একটি দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। পাশাপাশি এই ঘটনার জেরে সিমেন্ট ব্লকের সঙ্গে ট্রেনের যে ধাক্কা হয়, তাতে ট্রেনটির কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেই জানা গেছে। ড্রাইভার ও গার্ড ট্রেনটি পর্যবেক্ষণ করে গন্তব্যের দিকে নিয়ে যান।
তদন্তে উঠে এল ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত
ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও রেল দুর্ঘটনা যে ঘটে যেতে পারত, তা কেউই অস্বীকার করতে পারছেন না। সেই কারণে অজ্ঞাত ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, কেউ বা কারা ইচ্ছাকৃতভাবে সিমেন্টের ব্লক ট্র্যাকে বসিয়ে রেখেছিল, যাতে ট্রেনটি উল্টে যায় বা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ট্র্যাকে রাখা ব্লকগুলই খুব মজবুত ও আকারে বড় ছিল এবং এগুলি ট্রেনের গতিরোধ করার জন্য যথেষ্ট বিপজ্জনক ছিল। এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে মনে করা হচ্ছে।
সিসিটিভি ফুটেজে ষড়যন্ত্রকারীদের তল্লাশি
ইতিমধ্যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুলিশ এই ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ ও স্থানীয় সাক্ষ্য থেকে অপরাধীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ঘটনার পর, রাজস্থানের বিভিন্ন রেলপথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। রেল ট্র্যাকে অতিরিক্ত নজরদারি এবং সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যাতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য পুরোপুরি ব্যবস্থা নিচ্ছে রেল ও প্রশাসন।