গত ৮ ই আগস্ট ভোররাতে কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজে এক তরুণী চিকিৎসকের উপর যৌন নির্যাতন ও তাঁকে খুন করা হয়। হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। শুরুতে এটিকে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও পরে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে ধর্ষণ ও খুনের মামলা দায়ের হয়। শুরুতে রাজ্যের পুলিশ তদন্তভার সামলালেও পরে গোটা তদন্তের দায়িত্বে আসে CBI। এখন সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি বিচারাধীন। এদিকে নির্যাতিতা তরুণীর জন্য বিচার চেয়ে প্রায় রোজই পথে নামছেন হাজার হাজার মানুষ। কলকাতা সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গ এমনকি গোটা দেশে এই আন্দোলনের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে আরজি কর আন্দোলন নিয়ে যখন উত্তাল ছিল কলকাতা, তখন কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ডুরান্ড কাপের ডার্বি ম্যাচ বাতিল করে দেওয়া হয়। তারপর একযোগে প্রতিবাদে নামেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মোহামেডান ক্লাবের সমর্থকরা। তারপর টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচগুলি কলকাতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও ডুরান্ড কাপের একটি সেমিফাইনাল হয় কলকাতায়। আর সেই সেমিফাইনাল জিতে আপাতত টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে মোহনবাগান। তবে এই সেমিফাইনাল ম্যাচেও গ্যালারিতে বসে আরজি করে তরুণীর জন্য বিচার চাইলেন ফুটবল সমর্থকরা।
মোহনবাগানের ম্যাচে উঠে এল আরজি কর প্রসঙ্গ
ডুরান্ড কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচে ব্যাঙ্গালুরু এফসি দলের মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান। কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই ম্যাচে দলকে সমর্থন করার পাশাপাশি ‘বোনের জন্য বিচার’ চাইলেন দর্শকরা। এদিন গ্যালারিতে একটি ব্যানার চোখে পড়ে। এই ব্যানারে লেখা ‘হাতে হাত রেখে লড়াই, JUSTICE’। ব্যানারের নীচে লেখা, ‘আমাদের বোনের বিচার চাই’। সবশেষে মোহনবাগান সমর্থকদের জন্য লেখা ছিল ‘জীবনের রং সবুজ মেরুন’। যদিও এই ম্যাচকে ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছিল প্রশাসন। তবে এসবের মাঝে এই নীরব প্রতিবাদ সকলের নজর কেড়েছে।
ডুরান্ড কাপের ফাইনালে মোহনবাগান
ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই ছিটকে গেছে ইস্টবেঙ্গল। তবে মোহনবাগানের আশা জীবিত ছিল। এদিন সবুজ মেরুন দল ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে ব্যাঙ্গালুরু এফসি-র মুখোমুখি হয়েছিল। তবে ম্যাচের শুরুতেই মোহনবাগান ০-২ গোলে পিছিয়ে পড়ে। যদিও পরে একজোড়া গোল শোধ করে ম্যাচটিতে সমতা ফিরিয়ে এনে সবুজ মেরুনের ছেলেরা। শেষমেষ ম্যাচ গড়ায় ট্রাইব্রেকারে। আর সেখান থেকেই ম্যাচ জিতে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে পৌঁছে যায় মোহনবাগান। ফাইনালে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড দলের মুখোমুখি হবে তাঁরা।