ঢাকাঃ বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় অশান্তি ছড়িয়েছে সেখানে। বেশ কিছু সময় আগে কোটা বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। যে কারণে রীতিমতো পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। এরপর অন্তরবর্তী সরকার গঠিত হয় সে দেশে। নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত হয় সরকার। তবে এসবের মাঝেই ঘটে গেল বড় অঘটন। নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে বড় অগ্নিকাণ্ড!
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে শিরোনামে উঠে এসেছে ওপার বাংলা। বিক্ষোভের মাঝেই গত সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গাজি টায়ারস কারখানার ছয়তলা বাড়িতে আগুন লাগে। সেই আগুন নেভাতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছে দমকলকে। শেষ পর্যন্ত জানা যায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। এরপরেই প্রকাশ্যে উঠে আসে আসল ঘটনা। সেই অগ্নিকাণ্ডের পর দমকলের কাছে ১৭৬ জনের নাম পরিজনেরা নথিভুক্ত করে দাবি করেছেন তাঁরা ‘নিখোঁজ’। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এই ১৭৬ জন মানুষ অগ্নিকাণ্ডের জেরে প্রাণ হারালেন?
মৃত ১৭৬ জন!
আসলে ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের শিল্পনগরীতে অবস্থিত রূপশীর গাজী অটো টায়ার কারখানাটি সুপরিচিত ছিল কারণ এর মালিক ছিলেন এক সময়ের প্রভাবশালী গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজী। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে গাজী গ্রুপের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রীর আমলে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী থাকা গাজীকে অবশেষে ২৫ আগস্ট গ্রেফতার করা হয়। এর আগেও তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার সরকারের যখন পতন হচ্ছিল তখন ক্ষিপ্ত জনতা শেখ হাসিনার বাড়ি, বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙা থেকে শুরু করে আরও অনেক কিছু করা হয়। এই ঘটনায় তাজ্জব হয়ে যান সকলে। যাইহোক, এই গোলাম দস্তগীর গাজীর কারখানাতেও ব্যাপক হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় বড় বড় মেশিনের। গোলাম দস্তগীর গাজীর গ্রেফতারির খবর প্রকাশ্যে আসতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে জনতা।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার দিন একই কারখানায় থাকা গাজী মালিকানাধীন দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, টায়ার ফ্যাক্টরি ও গাজী পাইপসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মান্নান মঙ্গলবার বেনারকে বলেন, “সম্ভবত আগুনে পিলার ও মৌলিক কাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভবনটি ধসে পড়বে।”
গোষ্ঠী সংঘর্ষ
পুলিশ জানিয়েছে, কারখানার ভিতরে এলাকার দুষ্কৃতীদের দুই দলের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে মারামারি শুরু হয়। এরপরেই আচমকা আগুন লেগে যায় কারখানায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। কারখানার সামনে ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ। আগুন নেভার পর বহু মানুষ পুলিশের কাছে প্রায় ১৭৫ থেকে ১৭৬ জনের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ জানান। তবে পুলিশের দাবি অনুযায়ী, আগুনের ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে সেখানে কোনও মানুষের থাকার কথা নয়।