কলকাতাঃ বাইরের রাস্তায় বেরোলে ট্রাফিক আইন মেনে চলা সবার মৌলিক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। আসলে ট্রাফিক আইনের বিভিন্ন ধারা দুর্ঘটনা এড়িয়ে সুষ্ঠুভাবে পরিবহন ব্যবস্থাকে সচল রাখার উদ্দেশ্যেই তৈরি করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি, ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের কারণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে অনেক সাধারণ মানুষকে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিভিন্ন শহরে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ট্রাফিক নজরদারি চালানো হচ্ছে। এই ক্যামেরার মাধ্যমে ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের শনাক্ত করে চালান কাটার প্রক্রিয়াও ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়েছে অনেক শহরে।
সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং আইন মানার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ঠিকই, তবে এই প্রক্রিয়াটি অনেক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে আজকাল। বিশেষ করে প্রযুক্তিগত কারণে অনেক গাড়ি চালককে বিনা দোষে চালানের টাকা জমা দিতে হচ্ছে। আর এই সমস্যা বেশিরভাগ দেখা যাচ্ছে চার-চাকা গাড়ির চালকদের ক্ষেত্রে। বিশেষ করে তাঁদের পোশাকের রং নিয়ে মূল সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই আপনিও যদি গাড়ি চালিয়ে যাতায়াত করেন, তাহলে এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনার জানা উচিত। নাহলে আপনিও সমস্যায় পড়তে পারেন।
ভূতুড়ে চালান ও বিনাদোষে জরিমানা
সম্প্রতি, দেশের ‘আইটি হাব’ নামে পরিচিত শহর ব্যাঙ্গালুরুতে এক আইটি কোম্পানির কর্মীর সঙ্গে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। কেশব কিসলে নামের ওই কর্মী একদিন গাড়ি নিয়ে অফিস গিয়েছিলেন। কিছুক্ষণ পরেই তাঁর নামে চালান এসে যায়। সেই চালানে তাঁকে সিটবেল্ট না পরে গাড়ি চালানোর জন্য জরিমানা করা হয়। কিন্তু আদতে সিটবেল্ট না পরে তিনি গাড়ি চালান না বলেই জানান কেশব। তারপরেও এই ভূতুড়ে চালানের মনে বুঝতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাঁকে।
কেন এমন চালান পাঠানো হল ওই ব্যক্তিকে?
এই ঘটনা নিয়ে কেশব অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর তদন্ত শুরু হয়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় যে ওই কর্মী কালো জামা পরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কালো জামার উপর কালো সিটবেল্ট পরেই তিনি গাড়ি ড্রাইভ করছিলেন। কিন্তু ক্যামেরায় জামা ও সিটবেল্টের রং আলাদাভাবে ধরা যায়নি। সেই কারণে প্রযুক্তি ভেবেছে যে কোনো সিটবেল্ট নেই ওই চালকের। তাই ভুলবশত কেশবকে চালান পাঠানো হয়।
CCTV ক্যামেরায় ট্রাফিক নজরদারির সমস্যা
সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ট্রাফিক চালান কাটার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হলো ভুল তথ্যের ভিত্তিতে চালান কাটা। কিছু ক্ষেত্রে, ক্যামেরার গুণগত মান বা সঠিক অবস্থান না থাকার কারণে গাড়ির নম্বর ভুলভাবে শনাক্ত হয়, যার ফলে নিরপরাধ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চালান ইস্যু হয়। পাশাপাশি, সিসিটিভি ক্যামেরার প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতাও একটি বড় সমস্যা। অনেক সময় ক্যামেরার রেজোলিউশন কম থাকায় সঠিকভাবে গাড়ির নম্বর প্লেট পড়া সম্ভব হয় না। এছাড়াও, খারাপ আবহাওয়া বা আলো কম থাকার সময় ক্যামেরা সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।