দেবপ্রসাদ মুখার্জী: ভারতের সবথেকে জনপ্রিয় খেলা হল ক্রিকেট। বর্তমানে ভারতকে ছাড়া যেন ক্রিকেট বিশ্ব অসম্পূর্ণ। আমাদের এই দেশ থেকে অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার উঠে এসেছেন। শচীন টেন্ডুলকার, মহেন্দ্র সিং ধোনি, রাহুল দ্রাবিড়, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের ভারতীয় ক্রিকেটের লেজেন্ড বলা হয়। সঠিক সময়ে সুযোগ পেয়ে এবং সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা সফলতার শিখরে পৌঁছাতে পেরেছেন।
তবে এমন অনেক ক্রিকেটারও আছেন যাঁরা ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা সত্ত্বেও কখনও জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাননি। অনেকে বাধ্য হয়ে ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন। কিন্তু এমন কিছু ক্রিকেটারও আছেন, যারা জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। এখানে এমন পাঁচজন ক্রিকেটারের কথা বলা হলো, যাঁরা জাতীয় দলে ডাক পেলেও একটিও ম্যাচ খেলতে পারেননি।
ধীরাজ যাদব
মহারাষ্ট্রের এই প্রাক্তন ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রান করা সত্ত্বেও জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি। ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চতুর্থ টেস্টের জন্য ভারতীয় দলে জায়গা পেলেও তিনি কোনো ম্যাচ খেলতে পারেননি। কারণ তখন দলে ছিলেন গৌতম গম্ভীর, বীরেন্দ্র শেওয়াগ, শচীন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড় ও ভিভিএস লক্ষ্মণ। অথচ ধীরাজ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৭৬টি ম্যাচে ৫৮৩১ রান করেছেন ৫৬.০৬ গড়ে। সেই সঙ্গে ২০টি শতক এবং সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৬০ রান রয়েছে তাঁর নামে। এছাড়াও, ৩৭টি লিস্ট-এ ম্যাচে তিনি ৪৭ গড়ে ১৫৫৯ রান করেছেন, যার মধ্যে ৩টি শতক ও ১১টি অর্ধশতক রয়েছে।
শিব শঙ্কর পাল
বাংলা দলের এই প্রাক্তন পেসার তার উচ্চতা ও গতির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ২০০০-এর দশকে তিনি বাংলার হয়ে নিয়মিত খেলেছেন এবং ৬১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ২২০টি উইকেট নিয়েছেন। ভারত ‘এ’ ও বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের নিয়মিত সদস্য থাকলেও জাতীয় দলে খেলার সৌভাগ্য তাঁর হয়নি। ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুটি টেস্ট সিরিজে তিনি ভারতের স্কোয়াডে ছিলেন, কিন্তু কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। ২০১৬ সালে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেন এই ক্রিকেটার।
রণদেব বসু
ভারতের সেরা পেসারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রণদেব বসু। ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে খেলা ম্যাচে পাঁচ উইকেট পেলেও, শ্রীসন্থকে বেছে নেওয়া হয় তাঁর জায়গায়। এরপর তাঁর প্রতি নির্বাচকরা আর মনোযোগ দেননি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনি ৯১টি ম্যাচে ৩১৭টি উইকেট নিয়েছেন। আইপিএলে তিনি কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ও কলকাতা নাইট রাইডার্স দলের হয়ে খেলেছেন।
সুনীল ভালসন
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপের জন্য ভারতীয় দলে থাকা সত্ত্বেও কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি সুনীল ভালসন। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের করেও ভারতীয় দলে খেলার সুযোগ তাঁর হয়নি। তবে দিল্লি, তামিলনাড়ু ও রেলওয়ের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৭৫টি ম্যাচে ২১২টি উইকেট নিয়েছেন। অবসর নেওয়ার পর তিনি দিল্লি ডেয়ারডেভিলস দলের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন।
রাজেশ পওয়ার
মুম্বইয়ের এই বাঁহাতি স্পিনার ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করেও ভারতের জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাননি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৮৪টি ম্যাচে ২৮১টি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়াও ১১ বার পাঁচ উইকেট এবং ২ বার দশ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব রয়েছে রাজেশের নামে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের জন্য ভারতের ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দলে থাকা সত্ত্বেও চূড়ান্ত স্কোয়াডে জায়গা হয়নি তাঁর।