প্রীতি পোদ্দার: দেখতে দেখতে ২ মাস হতে চলল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া সেই নাটকীয় ঘটনার। এদিকে এখনও সুবিচার মেলেনি তিলোত্তমার। ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সরাসরি সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাইকে গ্রেফতার করা হলেও আর কাউকেই তথ্য প্রমাণের অভাবে এইমুহুর্তে গ্রেফতার করতে পারছে না সিবিআই। অন্যদিকে তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে CBI। আর এই আবহেই ফের আরও এক তৃণমূল বিথায়কের ডাক পড়ল সিজিও কমপ্লেক্সে।
CGO কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন তৃণমূল বিধায়ক
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষকে তলব করা হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে এখনও কিছু সরাসরি বলেননি তৃণমূল বিধায়ক। গোপন সূত্রে জানা গিয়েছে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে নির্যাতিতার মৃতদেহ তাঁর সোদপুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর মৃতদেহ শ্মশানে পোড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল নির্মল ঘোষ। তাই সেই সূত্রে এবার CBI এর কাছে ডাক পড়ল তাঁর। আজ অর্থাৎ সোমবার সকালেই নির্মল ঘোষ পৌঁছে গিয়েছেন সিজিও কমপ্লেক্সে।
এছাড়াও গতকাল পানিহাটি শ্মশানের ডোমদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই আধিকারিকরা। পানিহাটি শ্মশানে নির্যাতিতার মৃতদেহ দাহ করা হয়েছিল। সেই সময় গোটা শ্মশান চত্বর পুলিশ ঘিরে রেখেছিল। বাইরের লোকজনকে যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছিল না রাস্তা দিয়ে। জানা গিয়েছে পুলিশ তরুণীর মৃতদেহ আগে দাহ করতে বলেছিল ডোমদের। তার আগে দুটি মৃতদেহ লাইনে ছিল। কিন্তু সেই মৃতদেহ দুটির আগে তরুণীর মৃতদেহ সৎকার করা হয় পুলিশের চাপে। এবং সেই সময় তৃণমূল এর একাংশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। যার ফলে এবার সিবিআই মুখে পড়েছেন তারাও।
শ্মশানের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিও CBI এর হাতে পৌঁছল
জানা যায় শ্মশানে নাকি সেই রাতে পুলিশকে মৃতের দেহ তাড়াতাড়ি পোড়ানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন এই নির্মল ঘোষ৷ তাই প্রশ্ন উঠছে একজন বিধায়ক কীভাবে শ্মশানে উপস্থিত থাকতে পারেন এই ঘটনায়। যদিও বা এর আগে শ্মশানের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিও CBIএর হাতের নাগালে আসায় বার বার ঘোলা থানার আইসিকে তলব করা হয়েছিল। তিনি গড়হাজির ছিলেন। এবার ডাক পড়ল বিধায়কের।
গতকাল অর্থাৎ রবিবার সন্ধ্যা ৭টা ৪০ নাগাদ সিঁথিতে সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন তদন্তকারীদের একটি দল। সেখানে প্রায় তিন থেকে চার ঘণ্টা ছিল CBI এর দল। রাত ১১টা নাগাদ বেরিয়ে যায় তারা। এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে। সেদিন প্রায় ঘণ্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাঁকে।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গ সরকার দৃষ্টি আকর্ষণ করে আরজি কর কাণ্ডের শুনানির দিন পিছিয়ে দিয়েছে। আগে এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারিত হয়েছিল আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর। কিন্তু রাজ্যের আবেদনের ভিত্তিতেই পিছিয়ে গেল সুপ্রিম শুনানি। ২৭ সেপ্টেম্বরের বদলে আরজি কর কাণ্ডের শুনানি হতে চলেছে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর।