দেবপ্রসাদ মুখার্জী: যুবভারতী স্টেডিয়ামে ডুরান্ড কাপের ফাইনাল ম্যাচটি এখনো ভুলতে পারেননি মোহনবাগান সমর্থকরা। কারণ সেদিন শুধুমাত্র হতাশা নিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়েছিল সবুজ-মেরুন শিবিরকে। নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের কাছে হেরে ট্রফি হাতছাড়া হয়েছিল মোহনবাগানের। তবে এবার সেই হারের প্রতিশোধ নিলো সবুজ-মেরুন দল। আর সেটা হল ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ম্যাচে।
সোমবার ইন্ডিয়ান সুপার লিগের এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে মোহনবাগান ৩-২ গোলে হারিয়ে দিল্লি নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে। কলকাতার সেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনেই প্রতিশোধ নিলো সবুজ-মেরুন দলের ছেলেরা। এই ম্যাচে মোহনবাগান দু’বার পিছিয়ে পড়ার পরেও কামব্যাক করে এবং নিজেদের প্রথম জয় তুলে নেয়। ডুরান্ড কাপের ফাইনালের দ্বিতীয়ার্ধে যেভাবে দু’টি গোল হজম করেছিল মোহনবাগান, সভাবস এদিন দ্বিতীয়ার্ধেই দু’টি গোল করে জয় ছিনিয়ে নেয় মোহনবাগান।
ম্যাচের নায়ক দুই বাঙালি ফুটবলার
সোমবারের এই ম্যাচের মূল নায়ক হিসেবে উঠে এসেছেন মোহনবাগানের দুই বাঙালি খেলোয়াড় – দীপেন্দু বিশ্বাস এবং শুভাশিস বসু। তরুণ দীপেন্দু বিশ্বাস দিমিত্রি পেত্রাতোসের ফ্রিকিক থেকে হেডে প্রথম গোলটি করেন। কোচ জোসে মোলিনা তাঁর উপর আগের থেকেই আস্থা রেখেছিলেন। আর এই ম্যাচে কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন দীপেন্দু। অন্যদিকে, শুভাশিস বসুর ডিফেন্স নিয়ে শুরু হয়েছিল চর্চা। কিন্তু ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে কর্নার থেকে গোল করে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিলেন তিনি।
ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে মোহনবাগান
নর্থইস্ট ইউনাইটেড খেলা শুরুতেই আক্রমণাত্মক ছিল। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই আলাদিনের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। কিছুক্ষণ পরেই, মরক্কোর মহম্মদ আলি বেমামের প্রথম গোলটি করেন নর্থইস্টের পক্ষে। মোহনবাগানের গোলরক্ষক বিশাল কাইথকে চমক দিয়ে তিনি দলকে এগিয়ে দেন। তবে মোহনবাগান খুব দ্রুতই ম্যাচে ফিরে আসে। দীপেন্দুর হেড থেকে গোল করে সমতা আনে দল।
দ্বিতীয়ার্ধে দাপটের সঙ্গে ম্যাচ জিতে নেয় মোহনবাগান
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বৃষ্টি নামে। তবে বৃষ্টির মধ্যেও খেলা চালু থাকে। এদিকে মোহনবাগান শিবিরে গোলের জন্য চাপ বাড়াতে থাকে। ঠিক এই মুহূর্তে, কর্নার থেকে উঠে আসে অলড্রেডের সেট-পিস। নর্থইস্টের গোলরক্ষক গুরমিত সিংহ হয়তো বলটি সহজেই ধরতে পারতেন। কিন্তু ভেজা মাঠে পা পিছলে পড়ে যান তিনি। সেই সুযোগে শুভাশিস বসু গোল করে মোহনবাগানকে সমতা এনে দেন। নর্থইস্টের খেলোয়াড়েরা অবশ্য রেফারির কাছে ফাউলের আবেদন করেছিলেন, তবে তা নাকচ করা হয়। ম্যাচের শেষ পর্যায়ে বাঁ দিক থেকে সাহালের বাড়ানো নিচু ক্রসে শট মেরে গোল করেন কামিন্স। এই গোল মোহনবাগানকে ৩-২ ব্যবধানে জয় এনে দেয়।