সব বাড়ি মাটির, জমি ভগবান নারায়ণের নামে, ভারতের সেরা পর্যটন স্থলের তকমা পেল এই গ্রাম

Published on:

deomali rajasthan

শ্বেতা মিত্রঃ ভারত তথা বাংলায় সমস্ত রকমের সংস্কৃতির মেলবন্ধন চোখে পড়ে। এইটা ভারতের বুকে এমন অনেক পর্যটনস্থল রয়েছে যেখানে গেলে আপনারও চোখ জুড়িয়ে যাবে বৈকি। আর এই নিয়ে গর্বের শেষ নেই কারোর। কিন্তু আপনি জানেন কি যে ভারতের সেরা ভারতের বুকে এমন একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে না রয়েছে কোনো পাকা বাড়ি, না কারোর নাম জমি রয়েছে। অথচ সেই গ্রামের মুকুটেই এবার এমন এক পালোক জুড়েছে যেটি সম্পর্কে শুনলে ভারতীয় হিসেবে গর্ববোধ করবেন আপনিও। এখন আপনিও নিশ্চয়ই ভাবছেন যে কোন গ্রামের কথা বলা হচ্ছে তাহলে বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির উপর।

দেশের এই গ্রামের মুকুটে নয়া পালক

WhatsApp Community Join Now

আজ কথা হচ্ছে রাজস্থানের দেওমালি গ্রামকে নিয়ে। জানলে অবাক হবেন, ভারত সরকার এই গ্রামটিকেই দেশের সেরা পর্যটন গ্রাম হিসাবে ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘোষণা করা হয় কেন্দ্রের তরফে। আগামী ২৭ নভেম্বর দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। দেওমালি গ্রামটি বিওয়ার জেলার মাসুদা মহকুমার মধ্যে পড়ে। এই গ্রামের বিশেষত্ব হল এখানে প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমি ভগবান দেবনারায়ণের নামে রয়েছে। পাহাড় ঘেঁষা এক জায়গায় রয়েছে এক দারুণ সুন্দর মন্দির, যেখানে গেলে আপনারও চোখ জুড়িয়ে যাবে বৈকি। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত তাদের ইচ্ছা নিয়ে আসেন এই মন্দিরে। শুধু তাই নয়, এই দেওমালি গ্রামের কোনো মানুষের নিজের নাম জমি নেই।

কী বলছে সরকার

পর্যটন মন্ত্রকের যুগ্ম ডিরেক্টর জেনারেল অরুণ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ‘পর্যটন মন্ত্রকের উদ্যোগে সেরা পর্যটন গ্রাম প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এর মধ্যে পর্যটনের পাশাপাশি আমাদের সংস্কৃতি বজায় রাখা গ্রামগুলিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর পাশাপাশি এটি সম্প্রদায়ভিত্তিক মূল্যবোধ এবং জীবনযাত্রার পাশাপাশি সামাজিক ও পরিবেশগত ইত্যাদিতে ভারসাম্য বজায় রাখে। সেজন্য দেওমালি গ্রাম এই বিভাগে সেরা পর্যটন গ্রাম হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে।’

পর্যটন ক্ষেত্রের প্রচারের জন্য, কালেক্টর উৎসব কৌশল দেওমালিকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ পর্যটন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছিলেন। তৎকালীন মহকুমা আধিকারিক ভরত রাজ গুর্জর পরিচালিত এই তথ্যচিত্রে দেওমালির বাস্তব গ্রামীণ জীবন এবং সেখানকার পর্যটন সম্ভাবনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছিল।

গ্রামে নেই একটাও পাকা বাড়ি

তৎকালীন এসডিএম ভরতরাজ গুর্জর বলেছেন- এর তথ্যচিত্রটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তৈরি করা হয়েছিল এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। এইটা ডকুমেন্টরিতে গ্রামের ঐতিহ্য, লোকজীবন ও সংস্কৃতির পাশাপাশি গ্রামের বাস্তব প্রকৃতি তুলে ধরা হয়েছে। আর এই ভিডিওর ওপর ভিত্তি করে গ্রামটিকে শ্রেষ্ঠ পর্যটন পল্লী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।

এইটা বিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও আরাবল্লী পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত সুন্দর দেওমালি গ্রামটিতে কোনো পাকা বাড়ি আপনি দেখতে পাবেন না। এখানে নিমের কাঠ পড়ানো হয় না, কেরোসিন তেল নিষিদ্ধ। সেইসঙ্গে মাছ, মাংস, ডিমও এইটা গ্রামে রান্না হয় না। নানা গ্রামের সমস্ত বাড়ি এখনও মাটির তৈরি, যা এটিকে সবার থেকে অনেকটা আলাদা করে।

সঙ্গে থাকুন ➥
X