শ্বেতা মিত্রঃ যত সময় এগোচ্ছে ততই ভারতীয় রেলের মুকুটে একের পর এক পালক জুড়ছে। বর্তমান সময়ে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস থেকে শুরু করে তেজস এক্সপ্রেস, শতাব্দী এক্সপ্রেস-এর মতো ট্রেন ভারতের গর্ব বাড়িয়ে চলেছে শুধু তাই নয় আগামী এক দু বছরের মধ্যে বুলেট ট্রেন এবং হাইড্রোজেন ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে রেলের। তবে এবার ভারতীয় রেলের নতুন সংযোজন হতে চলেছে এয়ার ট্রেন। শুনে চমকে গেলেন তো? কিন্তু এটাই সত্যি। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এবার দেশের মধ্যে এয়ার ট্রেনকেও চলতে দেখবেন সাধারণ দেশবাসী।
নতুন চমক এয়ার ট্রেন
এমনিতে এই এয়ার ট্রেন আমেরিকার সহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশের অন্দরে চলাচল করে। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভারতের বুকেও এই এয়ার ট্রেনকে চলতে দেখা যাবে। এদিকে এই খবর চাওয়া হতেই সাধারণ দেশবাসীর মধ্যেই খুশির ঠিকানা নেই। এহেন অবস্থায় আপনার মনেও এখন প্রশ্ন চাগার দিচ্ছে নিশ্চয়ই যে এই ‘ এয়ার ট্রেন’ বিষয়টি কী আসলে? কী কী সুবিধা থাকবে? কবে ও কোন রুটে ভারতের প্রথম এয়ার ট্রেন চালু হবে? কোথায় কোথায় দাঁড়াবে? এসকল ব্যাপারে বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এইটা লেখাটির ওপর।
এয়ার ট্রেন কী?
যারা বিদেশের বিভিন্ন এয়ারপোর্টে ঘুরে বেড়িয়েছেন তারা জেনে থাকবেন যে এই এয়ার ট্রেন বিষয়টি ঠিক কী? আসলে এই এয়ার ট্রেন বিষয়টি হল বিমানবন্দরে ভেতরে থাকা একটি বিশেষ ট্রেন, এই ট্রেনে করে যাত্রীরা একটি টার্মিনাল থেকে অন্য টার্মিনালে অনায়াসে যেতে পারেন তাও কিনা একদম বিনামূল্যে। বিদেশে বেশ কিছু বিমানবন্দরে এই পরিষেবা চালু রয়েছে, তবে এবার ভারতের একটি বিমানবন্দরও এই পরিষেবা শীঘ্রই চালু হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আন্তর্জাতিক ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে এই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে। এই যাত্রার সবথেকে বড় একটি চমক হবে এই ট্রেনে করে গেলে আপনাকে একটা টাকাও অতিরিক্ত খরচ করতে হবে না।
দিল্লি বিমানবন্দরে নয়া চমক
দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনাল ১ থেকে টার্মিনাল ২/৩ পর্যন্ত যাতায়াত করা বর্তমানে অনেকের কাছেই মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনও কখনও জ্যামের কারণে, লোকেরা সময়মতো তাদের টার্মিনালে পৌঁছাতে পারেন এবং তাদের ফ্লাইটগুলি মিস হয়। তবে আর চিন্তা নেই, কারণে কয়েক বছর পর টি-১ থেকে টি-টুতে যাওয়াটা হবে কয়েক মিনিটের খেলা। দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লিমিটেড (ডিআইএএল) টার্মিনাল ১ এবং টার্মিনাল ২/৩ এর মধ্যে যাতায়াত সহজ করার জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় পিপল মুভার (এপিএম) তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৭.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এয়ার ট্রেনটি টি১, টি২/৩, অ্যারোসিটি এবং কার্গো সিটিতে থামবে। প্রকল্পটি ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কত টাকা খরচ হবে?
এর ফলে দিল্লি বিমানবন্দরে যাতায়াতকারী যাত্রীরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন, বিশেষত যাঁরা এক টার্মিনাল থেকে অন্য টার্মিনালে যেতে চান। এতদিন ডিটিসির বাসে যেতে হত, সেক্ষেত্রে অনেকটাই সময় লেগে যেত। তবে নতুন এয়ার ট্রেনের মাধ্যমে এবার যাত্রীরা কয়েক মিনিটেই এই যাত্রা শেষ করতে পারবেন। DIAL প্রকল্পের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে এবং অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে নিলাম শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও এই প্রকল্পের মোট ব্যয় এখনও অনুমান করা হয়নি, সূত্রের খবর, এটি ২,০০০ কোটি টাকারও কম হতে পারে।