দেবপ্রসাদ মুখার্জী: এবার রাজনৈতিক মঞ্চে পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ দেশ পাকিস্তানের হয়ে কোনো কথাই তুললো না। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যেখানে বারবার পাকিস্তানের হয়ে কাশ্মীর ইস্যু তুলে ভারতকে খোঁচা দিতো তুরস্ক, সেখানে এবছর সম্পূর্ণ উল্টোচিত্র দেখা গেল। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গাজা যুদ্ধ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করলেও কাশ্মীরের প্রসঙ্গ তোলেননি। যদিও এর আগে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর এরদোয়ান তাঁর বক্তৃতায় কাশ্মীর ইস্যু কথা বলেছিলেন। কিন্তু এবার তাঁর নীরবতা পাকিস্তানের সঙ্গে তুরস্কের বন্ধুত্বে ফাটল হিসেবে দেখছেন অনেক।
পাকিস্তানের সমর্থনে আগেও কথা বলেছিল তুরস্ক
২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করার পর পাকিস্তান বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীর ইস্যুটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সেগুলোর খুব একটা প্রভাব ফেলেনি। এদিকে, পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ দেশ হিসেবে পরিচিত তুরস্ক এর আগে জাতিসংঘে কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের সমর্থনে কথা বলেছিল। গত বছর, অর্থাৎ, ২০২৩ সালে এরদোয়ান বলেছিলেন যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা এবং সহযোগিতার মাধ্যমে কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
তুরস্ক কেন এবার কাশ্মীর ইস্যুতে নীরব?
২০২২ সালেও তিনি কাশ্মীরে ন্যায়বিচার এবং স্থায়ী শান্তি কামনা করেছিলেন। ২০২১ সালে তিনি কাশ্মীর সমস্যার সমাধান জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন, এবং ২০২০ সালে কাশ্মীরকে ‘উগ্র’ সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তবে এবার এরদোয়ানের কাশ্মীর ইস্যুতে নীরব থাকার একটি বড় কারণ হতে পারে তুরস্কের ব্রিকস সদস্যপদে অন্তর্ভুক্তির ইচ্ছা। ব্রিকস সদস্যপদ পেতে তাঁদের ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন। ভারতের সমর্থন ছাড়া তুরস্কের এই পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই কারণে হয়তো এবার পাকিস্তানের সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিচ্ছে দেশটি।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে ধাক্কা খেল পাকিস্তান
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, পাক প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কাশ্মীর, ইসলামোফোবিয়া এবং ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে কথা বলবেন। গত বছরও পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জম্মু ও কাশ্মীরের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন এবং এটিকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু এবার তুরস্কের সমর্থন পায়নি পাকিস্তান।