দেবপ্রসাদ মুখার্জী: চিনকে এবার কড়া জবাব দিলো জাপান। যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে চিনকে সতর্ক করলো দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ। সম্প্রতি, চীনের উস্কানিমূলক কার্যকলাপের জবাবে জাপান নৌবাহিনীর একটি ডেস্ট্রয়ার জাহাজকে চীন এবং তাইওয়ানের মধ্যে অবস্থিত তাইওয়ান প্রণালীতে পাঠালো। জাপানের এই কার্যমলাপ ঐতিহাসিক। কারণ, গত বুধবারই প্রথমবারের জন্য জাপানের সমুদ্র আত্মরক্ষা বাহিনীর ডেস্ট্রয়ার জাহাজ ‘জেএস সাজানামি’ তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করলো। গত মাসে চিনের একটি গুপ্তচর বিমান জাপানের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছিল। তারই জবাব দিতে জাপান এবার সমুদ্রপথে ক্ষমতা প্রদর্শন করতে উদ্যত হল।
চিনকে যোগ্য জবাব দিলো জাপানি নৌবাহিনী
জাপানের নৌবাহিনীর ‘জেএস সাজানামি’ জাহাজটি বুধবার সকালে পূর্ব চীন সাগর থেকে তাইওয়ান প্রণালীর দিকে যাত্রা শুরু করে। প্রায় ১০ ঘণ্টা পর জাহাজটি এই প্রণালী অতিক্রম করে। এই একই সময়ে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের নৌবাহিনীর জাহাজও তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করে। আসলে, জাপানের নৌবাহিনী অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নৌবাহিনীর সঙ্গে দক্ষিণ চীন সাগরে যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে চলেছে। সেই কারণেই এই সাহসী পদক্ষেপ নিলো জাপান। তবে জানা গেছে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা ফুমিও-র নির্দেশে এই কাজ করেছে নৌবাহিনী।
একাধিকবার জাপানের সীমা অতিক্রম করেছে চিন
চলতি বছর জাপানের আশেপাশে চিনের সামরিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৬ আগস্ট, সকাল ১১.২৯ মিনিটে, চিনের ‘শানশি Y-9’ নামের একটি গুপ্তচর বিমান পূর্বদিক থেকে জাপানের আকাশসীমায় প্রবেশ করে। এর পাশাপাশি, গত ১৮ সেপ্টেম্বর, চিনের নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ইরিওমোটে এবং ইয়োনাগুনি দ্বীপপুঞ্জের মাঝ বরাবর অতিক্রম করে। এই একজোড়া ঘটনার পরেই জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয় যে চিনের বিমান এবং যুদ্ধজাহাজ তাদের দেশের আশেপাশে অতিক্রম করেছে।
তাইওয়ান প্রণালী কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
তাইওয়ান প্রণালীটি চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। প্রণালীটির সবচেয়ে সংকীর্ণ অংশ প্রায় ১৩০ কিলোমিটার চওড়া। সাধারণত, কোনও দেশের সমুদ্রতট থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল বা ২২ কিলোমিটার পর্যন্ত জলসীমা সেই দেশের অন্তর্গত বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু তাইওয়ান প্রণালীকে আন্তর্জাতিক জলপথ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও, চিন এটিকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে। চিনের এই নীতির কারণে জাপান সাধারণত এই অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ পাঠায় না। কিন্তু এবার সেই কাজ করলো জাপান।