প্রীতি পোদ্দার: বহু চেষ্টার ফলস্বরূপ অবশেষে সফলভাবে চাঁদে বিজয় পতাকা উড়িয়েছিল ভারত। তবে শুধু চাঁদ নয়, সূর্যের পথে পাড়ি দিয়ে, লাল গ্রহ মঙ্গল ছুঁয়ে এবার সৌরজগতের সবচেয়ে উজ্জ্বল গ্রহ এবং পৃথিবীর পড়শি গ্রহ শুক্রে পাড়ি দিতে চলেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO। জোর কদমে চলছে শুক্রে যাওয়ার প্রস্তুতি। তাই এককথায় সোজাসুজি বলা যায় ISRO-র এই মুহূর্তে চন্দ্র, সূর্য এবং মঙ্গলের পর শুক্র।
অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় সরকার
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা চারটি মহাকাশ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম একটি হল শুক্র মিশন। এর নাম রাখা হয়েছে ভেনাস অরবিটার মিশন। মঙ্গলের পর পৃথিবীর এই দ্বিতীয় নিকটতম গ্রহ শুক্রের রহস্য উন্মোচনে মহাকাশ যান পাঠানোর জন্য বেশ জাঁকিয়ে পরিকল্পনা করে চলেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২০৪০ সাল পর্যন্ত ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার জন্য মোট ৩১ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা মহাকাশ অভিযানের জন্য অনুমোদন করেছে। যা চন্দ্রযান-৪, শুক্রযান ও আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র তৈরির জন্য ব্যয় করা হবে। সেই হিসেবে ভেনাস অরবিটার মিশন-এর জন্য ভারত ১২৩৬ কোটি টাকা খরচ করবে। তার মধ্যে ৮২৪ কোটি টাকা খরচ হবে শুধুমাত্র মহাকাশযানের জন্য।
জানা গিয়েছে, ISRO র মতে শুক্র মিশন হল এক ধরনের অরবিটার মিশন। এবং এই মিশনে পাঠানো মহাকাশযান শুক্রের কক্ষপথে পৌঁছাবে। কিন্তু গ্রহের পৃষ্ঠে অবতরণ করবে না। শুক্র থেকে পৃথিবীর গড় দূরত্ব প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ কিলোমিটার। দুই গ্রহ কক্ষপথের দুই ধারে পৌঁছে গেলে সেই দূরত্ব বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ কোটি কিলোমিটারে। প্রথম দিকে শুক্রে মোট ১৭৫ কেজি ওজনের যন্ত্রাংশ পাঠাবে ঠিক করেছিল ভারত। যদিও পরে সেই ওজন কমিয়ে ১০০ কেজি করার জন্য বেশ কিছু পরীক্ষা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।
কবে মহাকাশযান পাঠানো হবে শুক্রে?
প্রধানত শুক্রের ভূমিতল, আবহাওয়া ও বায়ুমণ্ডলের প্রক্রিয়া এবং গ্রহটির সূর্যের প্রভাব সম্পর্কে আরও ভাল ভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানোর জন্য শুক্র গ্রহের কক্ষপথে ‘ভেনাস অরবিটার’ বা ‘শুক্রযান’ প্রদক্ষিণ করাবে ISRO। যদিও ২০১৮ সালে ISRO শুক্র অভিযানের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। এবং ২০২৩ সালের মধ্যেই পৃথিবীর দ্বিতীয় নিকটতম গ্রহে মহাকাশযান পাঠানো হবে বলে ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় ইসরোর বিজ্ঞানীরা চন্দ্রযান অভিযান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে এবার আসা করা যাচ্ছে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৮ সালেই শুক্রে মহাকাশযান পাঠাবে ভারত। বিজ্ঞানের ইতিহাসে আরও এক নতুন ইতিহাস গড়ে তুলবে ভারত।