প্রীতি পোদ্দার: ২০০৯ সালে DVC র অপরিকল্পিত জল ছাড়ার জেরে ভয়ংকর বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল বাংলাকে। সেই একই চিত্ররূপ আরও একবার দেখতে পেল গোটা বাংলা। নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে এবং DVC র থেকে ছাড়া জলে পুজোর আগে রীতিমত হাবুডুবু অবস্থা সকলের। তাইতো দিন রাত কেন্দ্রকে তুলোধোনা করেই চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সম্প্রতি রাজ্যকে বন্যার কারণে বড় মানের আর্থিক টাকা বরাদ্দ করা হলো।
কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্যকে ‘বাঁ হাতে মনসা পুজো’ বলে কটাক্ষ করল তৃণমূল নেতা
বঙ্গে বন্যা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তা প্রদানকে টার্গেট করে তৃণমূল নেতা অরূপ রায় ‘বাঁ হাতে মনসা পুজো’ করার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “ গোটা বিশ্বের মানুষ দেখেছে, বিহার, পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্যে কেন্দ্রের তরফ থেকে বন্যায় ১৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এমনকি অসমকেও কেন্দ্রীয় বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও স্পেশাল প্যাকেজ পেয়েছে অন্ধপ্রদেশে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের জন্য ঘোষণা নেই তখনও। স্বাভাবিকভাবেই প্রবল প্রতিক্রিয়া উঠেছে বঙ্গবাসীর মনে যে বানভাসির জন্য কেন্দ্র কত টাকা বরাদ্দ করছে। আর তাতেই কেন্দ্র তড়িঘড়ি করে বন্যা পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গকে টাকা পাঠাল।
কোন রাজ্য কত পেল?
জানা গিয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলিকে ৫,৮৫৮.৬০ কোটি টাকা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল (SDRF) এবং জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল (NDRF) থেকে এই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ মোট ১৪টি রাজ্য এই তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া যাবে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গকে ৪৬৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রকে দেওয়া হচ্ছে ১,৪৯২ কোটি টাকা, অন্ধ্রপ্রদেশকে দেওয়া হচ্ছে ১,০৩৬ কোটি টাকা, অসমকে ৭১৬ কোটি টাকা, বিহারকে ৬৫৫.৬০ কোটি টাকা, গুজরাটকে ৬০০ কোটি টাকা এবং তেলেঙ্গানাকে ৪১৬.৮০ কোটি টাকা খরচ করছে।
এদিকে বঙ্গের নিম্নচাপের প্রভাবে প্রায় সব জেলাতেই মুষলধারায় বৃষ্টিতে ডুবে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। সেই অনুযায়ী কেন্দ্রের এই বরাদ্দ অত্যন্ত সামান্য বলে মনে করছে প্রশাসন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে রাজ্য প্রশাসনকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে রাজ্যে বন্যার জেরে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি দল পাঠানো হবে। সেই দলের রিপোর্ট অনুযায়ী তখন বাড়তি সাহায্য পাঠানো হতে পারে।
এছাড়াও, ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রয়োজনীয় সমস্ত লজিস্টিক সহায়তাও প্রদান করা হবে। এনডিআরএফ, সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর টিম মোতায়েন করা হয়েছে। এই বাহিনীর জওয়ানরা বন্যা দুর্গত এলাকায় পৌঁছে যাবেন। সেখানে উদ্ধার ও ত্রাণের কাজ চালাবেন।