প্রীতি পোদ্দার: এই রোদ তো এই বৃষ্টি। কখনও আবার ভারী নিম্নচাপের প্রভাবে বন্যার প্রবণতা দেখা গিয়েছে রাজ্য জুড়ে। আবহাওয়ার এই বিরাট খামখেয়ালিপনা বেশ কয়েকদিন ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ এদিকে হাতে মাত্র আর কয়েকদিন বাকি পুজোর। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কিন্তু মনে আবার আশঙ্কা বাঁধছে বৃষ্টি। এর আগে গত কয়েক বছর ধরে পুজোর আনন্দে জল ঢেলেছে এই অসুর বৃষ্টি৷ তবে সম্প্রতি জানা গিয়েছে এবার পুজোর মুখেই ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।
পুজোর মুখে ঘূর্ণিঝড়ের চোখ রাঙানি!
বেশ কয়েকদিন আগে আবহাওয়ার রিপোর্টে জানানো হয়েছিল মহালয়া থেকে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে বঙ্গ জুড়ে। অর্থাৎ পঞ্চমী-ষষ্ঠী-সপ্তমী-অষ্টমী-নবমী-দশমী পুজোর প্রতিটি দিনই কম-বেশি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে৷ যার ফলে প্যান্ডেল হুপিং করতে গিয়ে বৃষ্টির ঝামেলায় পড়তে হবে কলকাতাবাসীকে। তবে আবহাওয়াবিদদের একাংশ জানিয়েছিল যে লা নিনার প্রভাবে গত মাস থেকেই অর্থাৎ সেপ্টেম্বরেই শুরু হতে পারে৷ যার প্রভাব থাকতে পারে আগামী কয়েক মাস৷ আর সেই সূত্র ধরেই উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর চলমান মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছে। যার ফলে পুজোর মুখেই শুরু হবে ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব।
তবে স্বস্তির বিষয় হল পশ্চিমবঙ্গে নয়, এই ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব হতে পারে বাংলাদেশে। সেখানকার আবহাওয়া বিভাগ সম্প্রতি এই বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে। বলা হয়েছে অক্টোবরে বঙ্গোপসাগর থেকে একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা নির্দেশ করছে। যা দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে আমজনতার মনের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সূত্রের খবর, তিনটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশ উপকূলে। এর মধ্যে একটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হওয়ার আশঙ্কা!
আমেরিকার গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে এই ঘূর্ণিঝড় তৈরীর সিস্টেমটি অক্টোবর মাসের ১৫ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে তৈরি হতে পারে। গত বছর অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় সিতরাং এবং চলতি বছরে হামুনও একই সময়ের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছিল। সিতরাং খুলনা ও বরিশাল উপকূলে এবং হামুন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে আঘাত করে। যার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। এবারেও সেই সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সে কারণেই বাংলাদেশের চার বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে। এবং মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।