শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি কাণ্ডে নয়া মোড়। এবার হাসপাতালে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগে তৃণমূল নেতা আশিষ পাণ্ডেকে গ্রেফতার করল CBI। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। বিগত প্রায় দুমাসের মতো সময় থেকে সংবাদ শিরোনামে রয়েছে কলকাতার বিখ্যাত আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। গত ৯ আগস্ট আরজিকর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে সেমিনার রুম থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। পরে ময়নাতদন্তে জানা যায় যে মহিলা চিকিৎসককে প্রথমে ধর্ষণ তারপরে খুন করা হয়েছে। এহেন ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা বাংলা তথা দেশজুড়ে তীব্র শোরগোল পড়ে যায়। শুধু তাই না, এই ঘটনার মাঝেই আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ ওঠে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
এবার এই ঘটনায় সন্দীপ ঘোষের ডান হাত হিসেবে পরিচিত এবং TMCP নেতা আশিষ পাণ্ডেকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। ঘটনাকে ঘিরে প্রবল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাংলাজুড়ে।
গ্রেফতার আশিষ পাণ্ডে
সন্দীপ ঘোষ, আশিষ পাণ্ডে সহ আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগে গ্রেফতারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক তথা তৃণমূলের যুব নেতা আশিস পাণ্ডেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করে সিবিআই।
গত ২ সেপ্টেম্বর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ এবং বিক্রেতা বিপ্লব সিংহ (৫২) ও সুমন হাজরা (৪৬) এবং আফসার আলি খানকে দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করে।
তথ্য গোপনের চেষ্টা!
সিবিআই সূত্রে খবর, এই আশিষ গোপন করার চেষ্টা করছিল। সিবিআইয়ের হাতে একাধিক নথি রয়েছে যেখানে আর্থিক অনিয়মের নানা তথ্য প্রমাণ রয়েছে। আর সেই সব নথি দেখিয়ে আশিষকে এর আগে বার বার প্রশ্ন করে সিবিআই। তবে আর শেষ রক্ষা হলো না। এবার এই ঘটনায় আশিষকে গ্রেফতার করল সিবিআই।
প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তাররা আশিষ পাণ্ডের বিরুদ্ধে আরজি কর-এ থ্রেট কালচারের সঙ্গে যুক্ত থাকা এবং নিয়মিত তাদের হয়রানি করার অভিযোগ করেছেন। আরজি করের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ইতিমধ্যে আশিষ পাণ্ডেকে তলব করেছে এবং তার বক্তব্য রেকর্ড করেছে।
আরজি কর মামলা
আগেই জুনিয়র ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তালা থানার ইনস্পেক্টর অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সিবিআইয়ের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজে বিঘ্ন ঘটানো, প্রমাণ লোপাট, সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া এবং তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার সঙ্গে জড়িত ছিল দু’জনই।এই ঘটনার পর কলকাতা হাইকোর্ট ধর্ষণ ও হত্যা মামলা এবং আরজি কর সম্পর্কিত আর্থিক অনিয়মের মামলা উভয়ই সিবিআইয়ের কাছে স্থানান্তরিত করে। এরপর অভিক দে, বিরুপাক্ষ বিশ্বাস-সহ তৃণমূলের চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে পাণ্ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।