প্রীতি পোদ্দার: মা দুর্গার আগমনের অপেক্ষায় গোটা রাজ্য। কিন্তু এবারের পুজোতে যেন সেই অপেক্ষা অন্য রূপ ধারণ করেছে। আর সেটি হল সুবিচারের অপেক্ষা। গত ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালে ঘটা সেই নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে মুখরিত গোটা রাজ্য রাজনীতি। ২ মাসের মাথায় এসে পড়লেও ধর্ষণ কাণ্ডে সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রাই ছাড়া কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হল না। আর এই আবহে ফের আরও এক শিশুকে হতে হল ধর্ষণের বলি।
বাড়ি ফেরার পথে অপহরণ!
ঘটনাটি ঘটেছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জয়নগর থানা এলাকায়। জানা গিয়েছে, প্রতি দিনের মতো গতকাল অর্থাৎ শুক্রবারও চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রী মহিষমারিহাট এলাকায় টিউশন পড়তে গিয়েছিল। পড়তে যাওয়ার রাস্তার সামনের বাজারেই ছিল তার বাবার দোকান। টিউশন শেষে দোকানে বাবার সঙ্গে দেখাও করেছিল শিশুটি। তার পর একাই সে বাড়ি ফিরছিল। কিন্তু সেখানেই ঘটে বিপদ। পথে তাকে অপহরণ করা হয় এবং তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। তার পর ফেলে দেওয়া হয়েছে পুকুরে।
এদিকে নির্দিষ্ট সময়ের পরেও মেয়ে বাড়ি না ফেরায় চারিদিকে খোঁজখবর করতে শুরু করে পরিবারের লোকজন। এরপর মেয়ের খোঁজ নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু অভিযোগ ওঠে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে গেলে প্রথমে পুলিশ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। শেষে রাতের দিকে বাড়ির পাশের খাল থেকে ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা।
পুলিশের প্রতি ক্ষোভ দেখিয়ে থানায় ভাঙচুর করল গ্রামবাসী
যার ফলে আজ সকাল থেকে জয়নগর থানা ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ শুরু করেছেন এলাকাবাসী। অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে চিৎকার করছেন তাঁরা। পুলিশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ রয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের। এমনিক জয়নগরের মহিষমারিহাট পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। থানায় ঢুকে ভাঙচুরও চালানো হয়। হামলার মুখে পড়ে জখম হন পুলিশের কয়েকজন আধিকারিক। অবস্থা এতটাই ভয়ংকর হয়ে পড়েছে যে খবর পেয়েই এসডিপিওর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পৌঁছেছে এলাকায়।
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ প্রথমেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি। যদি গুরুত্ব দিয়ে দেখত তাহলে শিশুটিকে প্রাণে বাঁচানো যেত। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে রাতে পুলিশ তদন্ত শুরু করলে এক যুবককে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, যুবক সাইকেলে করে শিশুটিকে নিয়ে যাচ্ছেন। ওই যুবককে রাতেই আটক করেছে পুলিশ। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আপাতত শিশুটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে।