শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ বিতর্ক আর বাংলাদেশ (Bangladesh) যেন একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে। টানা ছাত্র বিক্ষোভের জেরে ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে সে দেশে। দীর্ঘ ১৫ বছরের শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের অবসান ঘটে এখন বাংলাদেশে গঠিত হয়েছে মোঃ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। এতকিছুর পরেও বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারে মাত্রা যেন কিছুতেই কমছে না বলে অভিযোগ উঠছে ভুরি ভুরি। এবারও নতুন করে শিরোনামে উঠে এলো বাংলাদেশ। এখন নিশ্চয় ভাবছেন কি হয়েছে? তাহলে বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই লেখাটির উপর।
এপার বাংলায় উঠল বয়কট বাংলাদেশের ডাক
প্রবল জনবিক্ষোভের মুখে পড়ে গত ৫ ই আগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এদিকে এই রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে বাংলাদেশের বেশ কিছু ঘটনা ঘটে গিয়েছে যা দেখে রীতিমতো চমকি দিয়েছে গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশে থাকা হিন্দুদের ওপর আক্রমণ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে গণপিটুনি একের পর এক ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। আর যেন ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস সোসাইটি। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা সংখ্যালঘুদের উপর ইসলামপন্থী আক্রমণের বিরুদ্ধে ‘বয়কট বাংলাদেশ’ প্রচার শুরু করেছে।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর চলমান ইসলামপন্থী আক্রমণের মধ্যে, পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত হিন্দুরা ইসলামিক প্রজাতন্ত্রে উত্পাদিত পণ্য বয়কট করার জন্য প্রচার চালাচ্ছেন।
‘বাংলাদেশ আউট’ আন্দোলন
বিক্ষোভকারীদের মতে, ‘বাংলাদেশ আউট’ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল একটি দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রকে অর্থায়ন বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা থেকে, যা এই বছরের ৫ আগস্ট থেকে ইসলামপন্থীদের হাতে চলে গেছে। প্রথম দিকে রি আন্দোলন তেমন দিশা না পেলেও ধীরে ধীরে তা একটা বড় আকারে ধারণ করতে শুরু করে। বর্তমানে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ, মন্দির, দোকান, ঘরবাড়িতে আক্রমনের প্রতিবাদে বাংলার কমপক্ষে ১২টি জেলায় বিক্ষোভ প্রতিবাদ চলছে। বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন ও জমজমাট এলাকায় গিয়ে ‘বাংলাদেশ আউট’-এর ডাক দেওয়া হচ্ছে।
#BoycottBangladesh স্বেচ্ছাসেবীরা অপরিচিতদের কাছে গিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের সচেতন করছেন এবং তাদের সেই দেশের পণ্য বয়কট করার আর্জি অবধি জানাচ্ছেন। ময়ূখ পাল নামের এক আন্দোলনকারী বলেছেন যে তারা এখনও পর্যন্ত ২৫০০ টিরও বেশি পোস্টার বিতরণ করেছেন এবং ১ লক্ষেরও বেশি হিন্দুকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করেছেন। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, মোট ৪টি বিষয় সকলকে খেয়াল রাখতে হবে।
১) অবিলম্বে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা (পর্যটন ও চিকিৎসাসহ) দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
২) ভারতে বসবাসরত এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতবিরোধী প্রচার চালানো বাংলাদেশি নাগরিকদের শনাক্ত করে ভারত থেকে বের করতে হবে।
৩) হিন্দুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যে জড়িত থাকা ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর মতো মৌলবাদী ইসলামী সংগঠনগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে।
৪) বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য আমদানি ও ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।
বাংলার জায়গায় জায়গায় পোস্টার পড়ছে
বয়কট বাংলাদেশ স্লোগান তুলে বাংলার জায়গায় জায়গায় পোস্টার পড়েছে ইতিমধ্যেই। পোস্টারের একটি বড় অংশে হিন্দু সম্প্রদায়ের হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ এবং মন্দির ও বাড়িঘর ধ্বংসের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এটিতে একটি কিউআর কোডও দেওয়া হয়েছে যেখানে কেন করে স্ক্যান করে পাঠকরা অতিরিক্ত তথ্য জেনে নিতে করতে পারে। পোস্টারগুলিতে লেখা, “হিন্দুদের রক্তে রাঙা বাংলাদেশি জামাকাপড় বর্জন করুন।”
পোস্টারে আরও লেখা, ‘বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি করা শাড়ি, চুড়িদার, শার্ট, টি শার্ট, সোয়েটার, জ্যাকেট বর্জন করে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অর্থনৈতিক জবাব দিন। ‘