প্রীতি পোদ্দার: এইমুহুর্তে রাজ্যে আরজি কর-কাণ্ডকে ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে গত দুই মাসের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এখনও কোনো সঠিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছে না প্রশাসন। আর এই ঘটনার প্রতিবাদে বারবার পথে নেমেছে নাগরিক সমাজ। এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্রমেই বাড়ছে ক্ষোভ। কিন্তু এবার পুজো মিটতেই বাজল ভোটের দামামা। রাজ্যের ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গেল।
উপনির্বাচনের ঘোষণা রাজ্যে!
চলতি বছর লোকসভা ভোট মেটার পরেও এখনও বিধায়কশূন্য হয়ে রয়েছে রাজ্যের মোট ছয়টি বিধানসভা কেন্দ্র। তাই আগামী ১৩ নভেম্বর উপ নির্বাচন হবে রাজ্যের ছয়টি বিধানসভা কেন্দ্রে। নৈহাটি, হাড়োয়া, মেদিনীপুর, তালড্যাংরা, মাদারিহাট এবং সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রে ১৩ নভেম্বর উপ নির্বাচন। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে নৈহাটি কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের পার্থ ভৌমিক। হাড়োয়া থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম। মেদিনীপুর থেকে জয়ী হয়েছিলেন ঘাসফুল শিবিরের জুন মালিয়া। বাঁকুড়ার তালড্যাংরা থেকে জয়ী হন তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তী। সিতাই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন তৃণমূলের জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া এবং আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা।
পথের কাঁটা আরজি কর কাণ্ড!
আর এই ৬ জন-ই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিজের দলের হয়ে ভোটে লড়েন এবং জয়ী হন। তবে এই লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর কিছুদিন আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান হাজি নুরুল ইসলাম। এদিকে সকল প্রার্থীকেই সাংসদ হিসেবে শপথগ্রহণের আগে তাঁদের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল। যার ফলে এই মুহূর্তে এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলি বিধায়ক শূন্য হয়ে পড়েছে। তাই এই নির্বাচন। কিন্তু সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে রাজ্যের শাসক দল ক্রমেই ভোট বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে এদিকে গেরুয়া শিবিরের আসন সংখ্যা বাড়ার বদলে উল্টে কমতে শুরু করেছে। আর এই আবহেই এবার শাসকদলের আনন্দের মাঝে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে আরজি কর কাণ্ড।
আসলে আরজি কর কাণ্ডের আবহে বাংলার সকল সাধারণ মানুষ কার্যত বিমুখ শাসকদলের প্রতি। কারণ জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে কোনো প্রতিক্রিয়া যেমন দেখাচ্ছে না, তেমনই সমাজে একের পর এক ধর্ষণকাণ্ডে রীতিমত জড়িয়ে পড়ছে শাসকদল। আর এইখানেই আশার আলো দেখছে বিজেপি। তাই এই উপ নির্বাচন রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এবার দেখার বিষয় বিধানসভার ভোটবাক্সে কোন দল কতটা প্রভাব ফেলতে চলেছে।