প্রীতি পোদ্দার: গত শনিবার মহারাষ্ট্রের নির্মল নগরে নিজের অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা বাবা । আর সেই সময়ই তাঁকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। গাড়িতে ওঠার আগেই গুলির ঝাঁঝরায় একেবারে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। শেষে তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। তদন্ত করে জন্য গিয়েছে, বাবা সিদ্দিকিকে লক্ষ্য করে মোট তিনটি গুলি চালানো হয়েছে। কিন্তু কী কারণে গুলি চালানো হয়েছে, সে ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়েই উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য।
সিদ্দিকিকে হত্যার পরিকল্পনা সফল বিষ্ণোই গ্যাংয়ের
সূত্রের খবর, সিদ্দিকি হত্যাকাণ্ডে আরও একবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই এর নাম। ইতিমধ্যেই খুনের দায় স্বীকার করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছে কুখ্যাত ওই দুষ্কৃতীর দল। এই মুহূর্তে দেশের ১ নম্বর ডন হিসেবে তকমা দেওয়া হয়েছে বিষ্ণোইকে। কিন্তু তাঁর বর্তমান ঠিকানা এখন গুজরাটের সবরমতী জেলে। কিন্তু জেলে বসেও একের পর খুন, হুমকির মতো ভয়ংকর অপরাধের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন এই গ্যাংস্টার। এর আগে কোনো রাখঢাক না করেই প্রকাশ্যেই তিনি বলেছেন, বলিউডের সুপারস্টার সলমন খানকে খুন করতে চান। তবে তার আগেই সলমন-ঘনিষ্ঠ এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকিকে হত্যার পরিকল্পনা সফল করল বিষ্ণোই গ্যাং। আর সেখানেই প্রশ্ন উঠছে কারাবন্দি অবস্থায় কীভাবে এই পরিকল্পনা করছেন তিনি?
তদন্তের মধ্যেই উঠে আসছে ডাব্বা কলিং!
এই পরিস্থিতিতে নতুন এক অপরাধ পদ্ধতির নাম বার বার উঠে এসেছে। আর সেটি হল ‘ডাব্বা কলিং’। বিগত কয়েক মাসে দিল্লি, পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং রাজস্থানের মতো বিভিন্ন রাজ্যে এই ‘ডাব্বা কলিং’ ছড়িয়ে পড়েছে। আসলে এর মাধ্যমে বড় বড় ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা তোলে মূলত বিদেশে বসবাসকারী গ্যাংস্টারেরা। এছাড়াও ‘ডাব্বা কলিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা তোলে বিদেশে বা জেলে বসবাসকারী গ্যাংস্টারেরা। এখানেই উঠে এসেছে লরেন্স, গোল্ডি ব্রার এর নাম। বিভিন্ন দেশ থেকে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল এর মাধ্যমে ওই ফোন করে টাকা চায় কুখ্যাত অপরাধীরা। পাশাপাশি, ডাব্বা কলিংয়ের এই চক্র এমন সব অ্যাপ ব্যবহার করে যা ‘এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন’ বা অতিরিক্ত সুরক্ষা প্রদান করে। এর ফলে অপরাধীদের তথ্য সুরক্ষিত থাকে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে বিখ্যাত পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালার হত্যাকাণ্ডের হাত ধরে প্রথমবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল লরেন্স। সেই থেকেই দেশের ডন বিষ্ণোই। আর তখনই জানা গিয়েছিল তাঁর হিট লিস্টে রয়েছে সুপারস্টার সলমন খান। আসলে রাজস্থানে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ের সময় ২টি কৃষ্ণসার হরিণ শিকার করার অভিযোগ ওঠে সলমন খানের বিরুদ্ধে। এদিকে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের কাছে কৃষ্ণসার হরিণ অত্যন্ত পবিত্র। ফলে ওই ঘটনায় সলমনের উপর রেগে যান লরেন্স বিষ্ণোই। যদিও তখন লরেন্সের বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর। সেই সময় থেকেই সলমনকে টার্গেট করেছেন বিষ্ণোই।