নয়া দিল্লিঃ ভারতের টেলিকম সেক্টরের ইতিহাসে হয়তো প্রথমবারের মতো একজোট হল রিলায়েন্স Jio ও Airtel। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আসলে রাজধানী দিল্লিতে চলমান ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস মঙ্গলবার যেন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। একদিকে মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স জিও এবং অন্যদিকে সুনীল ভারতী মিত্তলের এয়ারটেল এবং অন্যদিকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। দেশীয় সংস্থাগুলির আশঙ্কা, ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেসের হাত ধরে মাস্কের সংস্থা স্টার লিঙ্ক এবং জেফ বেজোসের স্যাটকম ভেঞ্চার প্রজেক্ট কুইপারের ভারতে ঢোকার রাস্তা আরও সহজ হয়ে যাবে। সেখানে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা হলেও দেশের বড় কিছু সংস্থা যেমন জিও, এয়ারটেলের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এবার মনে করা হচ্ছে, জেফ বেজোস এবং ইলন মাস্ককে রুখতে যা দরকার হয় সেটাই একজোট হয়ে করবেন মুকেশ আম্বানি এবং সুনীল মিওল।
দিল্লিতে ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস অনুষ্ঠান
মঙ্গলবার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তাঁর উপস্থিতিতে জিও চেয়ারম্যান আকাশ আম্বানি এবং এয়ারটেল সুনীল মিত্তল সরকারের কাছে অভিযোগ করেন যে বিদেশি সংস্থাগুলিকে ভারতের বাজারে সহজ প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ভারতীয়দের তথ্য দেশেই সংরক্ষণ করার দাবি জানান আকাশ আম্বানি এবং তা বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে এয়ারটেল কর্তা সুনীল মিত্তল পরামর্শ দেন যে বিদেশী উপগ্রহ যোগাযোগ সংস্থাগুলিরও দেশীয় সংস্থাগুলির মতো স্পেকট্রাম কেনা উচিত। দেশীয় সংস্থাগুলি নিলামের মাধ্যমে স্পেকট্রাম নেয়। ইলন মাস্কের স্টারলিংক স্যাটেলাইট যোগাযোগের একটি প্রধান ও পুরনো খেলোয়াড়।
কী বললেন ইলন মাস্ক?
এদিকে জিও-র আপত্তিতে গর্জে উঠেছেন ইলন মাস্ক। তিনি নিলামের বিরোধিতা করেছেন। সোমবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মাস্ক লেখেন, “এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে এই স্পেকট্রামকে স্যাটেলাইটের শেয়ার্ড স্পেকট্রাম বলে অভিহিত করেছে। সুনীল মিত্তল তাঁর বক্তব্যে জিও-র দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন যে স্যাটেলাইট অপারেটর যারা শহরাঞ্চল এবং খুচরা গ্রাহকদের সেবা দিতে চান তাদের নিয়মিত লাইসেন্স প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।”
মাস্কের মতে, ‘ ভারতেও বিদেশি সংস্থাগুলির উচিত এক্ষেত্রে পথ অনুসরণ করা। লাইসেন্স নিতে হবে, স্পেকট্রাম কিনতে হবে, লাইসেন্স ফি ও ট্যাক্স দিতে হবে এবং সব নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। যদি তারা তা করে তবে আমরা তাদের দু’হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানাব।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্পেকট্রামের প্রশাসনিক বণ্টন বন্ধ করে দিতে চায় জিও। এ জন্য তিনি বিকল্প খুঁজছেন। এর মধ্যে আইনি বিকল্পও রয়েছে।
কী বলছে কেন্দ্র?
এই বিষয়ে বড়সড় মন্তব্য করেছে কেন্দ্র। স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য প্রশাসনিক পদ্ধতিতে স্পেকট্রাম বরাদ্দ করবে কেন্দ্র মঙ্গলবার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তবে তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন যে প্রশাসনিক পদ্ধতির মানে এই নয় যে তার কোন খরচ পড়বে না। স্টারলিং এর কর্ণধার ইলন মাস্ক জানিয়েছেন যে ভারত যদি স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড স্পেকট্রাম বরাদ্দ না করে সেটা নিলাম করে তাহলে সেটা হবে অভূতপূর্ব।