প্রীতি পোদ্দার: বর্তমানে রাজ্যে যে কোনও আইনবিরুদ্ধ এবং ভয়ংকর ঘটনার সঙ্গে ঘুরে ফিরে নাম উঠে আসছে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের। আর সেই খবর যেন ইদানিং বেড়েই চলেছে। গত ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালে তিলোত্তমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া নারকীয় ঘটনায় শুরু থেকেই নাম উঠেছে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের। এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত হিসাবে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু CBI এখনও তদন্ত করে চলেছে। আর এই আবহে এবার সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ভূমিকা নিয়ে বড় মন্তব্য করলেন প্রধান বিচারপতি।
গত মঙ্গলবার আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যের আইনি ব্যাখ্যা তলব করল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রসঙ্গ উঠলে এক বিস্ফোরক আদেশ দেন। তিনি জানান, ‘থানা, স্কুল, হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তাঁরা ডিউটি করেন কি না, রাজ্যকে তা আদালতের কাছে জানাতে হবে।’ আর এই নির্দেশের প্রেক্ষাপটে আইনজীবীরা মনে করছেন যে আগামী দিনে হয়তো রাজ্যে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ছাড়া অন্য কোন কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ করা হবে না।
হলফনামার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের!
এদিন রাজ্য সরকারের কাছে আদালত লিখিত ভাবে জানতে চায়, যে পশ্চিমবঙ্গে মোট কতজন সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছেন, কারা সিভিকদের নিয়োগ করেন, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী, এবং কীভাবে এদের বেতন দেওয়া হয়। দিওয়ালির পরের শুনানিতে রাজ্যকে এই তথ্যগুলো হলফনামার আকারে বিস্তারিত তথ্য হিসেবে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন৷ শুধু তাই নয়, এ দিনের শুনানিতে রাজ্যের হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো সংক্রান্ত নানা কথা আদালতে পেশ করা হয়। প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘আপনারা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হলফনামা দেখেছেন? রাজ্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজে ৮৯০টি ডিউটি রুম তৈরি করা হয়েছে৷ সিসিটিভিও লাগানো হয়েছে৷ ২৫ অক্টোবরের মধ্যে সব কাজ শেষ করা হবে বলে রাজ্য জানিয়েছে৷’
চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে উঠে আসে বড় মন্তব্য!
কিন্তু চিকিৎসকের আইনজীবী করুণা নন্দী এই বিবৃতির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে জানান যে , ‘রাজ্যের তরফে হলফনামায় যা বলা হয়েছে, তার বিন্দু মাত্র কোন কাজ হয়নি৷ অর্থাৎ রাজ্য সরকার যে জিনিসগুলির দাবি করছে তার ধারে কাছে কোন কাজ হয়নি। প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৩ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার৷ এদিকে নীলরতন সরকার হাসপাতালে CCTV লাগানোর জন্য গত বছরের বাজেট ছিল মাত্র এক টাকা!’ কিন্তু রাজ্যের ক্ষেত্রে ১২৩ কোটি টাকা খরচের কথা উঠলে আইনজীবী করুণা নন্দী পাল্টা দাবি তোলেন যে ২৫ হাজার চিকিৎসকই জানাবে কোন কাজ কিছুই হয়নি৷
দুই পক্ষের অভিযোগের দাবিতে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হলফনামায় জানিয়েছেন, ২৮টি মেডিক্যাল কলেজে কাজ চলছে৷ যার মধ্যে আরজি করও রয়েছে৷ ১৫১৪ জন অতিরিক্ত সিকিউরিটি পার্সোনেল সব হাসপাতালে মোতায়েন করা হবে।’