প্রীতি পোদ্দার, কলকাতাঃ করোনা পরিস্থিতির সময়ে যখন সবে লকডাউন পরিস্থিতি কাটল তখন কলকাতায় বেসরকারি বাস এবং মিনিবাসের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। পরে যদিও এই অবস্থায় কোনোরকম ভাবে কাজ চালিয়ে নিচ্ছিল যাত্রীরা। কি তো এই আবহে দুর্গাপুজো মিটতেই ফের পরিবহন দুর্যোগ জুটল যাত্রী এবং চালকদের কপালে। একধাক্কায় ৫৬৫টি বাস বসে গিয়েছে।
একধাক্কায় অনেকটাই কমল বাসের সংখ্যা!
পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে যেই সকল পরিবহনগুলি ১৫ বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ করেছে, সেই পরিবহনগুলো আর রাস্তায় নামতে পারবে না। এবার সেই নির্দেশ কার্যকর হতে চলেছে। গত ১ আগস্ট থেকে সেই নির্দেশ কার্যকর করছে পরিবহন দফতর। বেসরকারি রুটে একধাক্কায় প্রায় ৫৬৫টি যাত্রীবাহী বাস বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই একই কারণে প্রায় হাজার খানেকের বেশি বাস বসে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। যার ফলে, সন্ধ্যা নামলেই খালি হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। অফিসযাত্রী এবং নিত্যযাত্রীদের বাস পাওয়া দায় হয়ে পড়েছে। বাস মালিকরাও যেমন চাপে পড়েছেন কলকাতায় তেমন বড় সঙ্কটে পড়েছে গণপরিবহণ ব্যবস্থা।
কেন বসিয়ে দেওয়া হল বাস?
আসলে ২০০৯ সালে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত একটি মামলা করেছিলেন। পুরনো বাসের কালো ধোঁয়া বাতাসে মিশে দূষণের সৃষ্টি করছে এই অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে, ১৫ বছরের বেশি বয়স হয়ে গেলে আর কোনও বাস কলকাতা শহর তথা কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট অথিরিটি-র এলাকায় চালানো যাবে না। পরে যদিও এই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বাসমালিকদের সংগঠন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলা পাঠিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্টে।
তবে বিকল্প একটা পথ তৈরি করা হয়েছে। আর সেটি হল বেসরকারি বাস মালিকদের লিজের ভিত্তিতে সরকারি বাস চালানোর ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। তবে এটা করতে হলে পরিবহণ দফতরকে কিছু অর্থ দিয়ে বাস চালাতে হবে। সেক্ষেত্রে ওইসব বাসের রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে যাঁরা লিজ নেবেন। কিন্তু তাতেও খুব লাভ হচ্ছে না বলেই বেসরকারি বাস পরিবহণের কর্তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ জুড়ছে আরও ৪০ কিমি লাইন, কবে? বড় সুখবর দিল কলকাতা মেট্রো
এই বিষয়ে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানান, ‘১৫ বছর পরও অনেক বাসের ইঞ্জিন ভাল থাকে। সেগুলি দেখা হবে। নিয়ম হওয়া উচিত, যাতে ১৫ বছর পার করার পর পরীক্ষা করা হয়। বাসটির অবস্থা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’ অন্যদিকে সিটি সাব-আর্বান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলছেন, এই বিষয়ে প্রশাসন সদর্থক ভূমিকা নিয়ে যাত্রীরাও উপকৃত হবেন। বহু বাস মালিক বুঝেই উঠতে পারছেন না, কী করা উচিত। তাঁদের বাস এক জায়গায় নিয়ে গিয়ে পুলিশ রেখে দিচ্ছে বলে অভিযোগ।