প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২ মাস পেড়িয়ে গেলেও এখনও অধরা তিলোত্তমার বিচার। সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে একের পর এক সময় নিয়েই চলেছে CBI। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সঞ্জয় রাইকে ছাড়া আর কাউকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সরাসরি গ্রেফতার করা হয়নি। কিন্তু তবুও থেমে যায়নি জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন। অনশন যেন আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। আর এই আবহেই এবার তাঁরা ধর্মঘটের চিন্তা ভাবনা করতে শুরু করলেন।
ধর্মঘটের ডাক আন্দোলনকারীদের!
গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই বৈঠকের পর জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী সোমবার পর্যন্ত সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। যদি ওই সময়ের মধ্যে প্রশাসনের তরফ থেকে কোনরকম প্রতিক্রিয়া না পাওয়া যায় তাহলে আগামী মঙ্গলবার হাসপাতালে সর্বাত্মক ধর্মঘট হবে। আর সেই ধর্মঘট পালন করবেন সিনিয়র এবং জুনিয়র দুই ডাক্তারেরাই।
সরাসরি অনশন মঞ্চে প্রস্তুত মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ!
এদিকে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মঘটের হুঁশিয়ারির ২৪ ঘণ্টা পরেই সেই চিত্রে অনেক পরিবর্তন দেখা দিল। একেবারে সটান করে ধর্মতলার অনশনমঞ্চে পৌঁছে গেলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সঙ্গে ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব এবং কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ও। প্রথমে যাঁরা অনশন করছেন তাঁদের স্বাস্থের খবর নেন তাঁরা। পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসন এখনও অবধি কী করতে পেরেছেন, কী করতে পারেননি সেই ব্যাপারেও বেশ অনেকক্ষণ আলোচনা করেছেন তাঁরা। এরপরই বিরাট চমক দেখা যায়। মুখ্যসচিব পরক্ষণেই তাঁর ফোন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনশনকারীদের ফোনে কথা বলিয়ে দেন।
অনশন তুলে নেওয়ার অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর!
ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন আন্দোলন থেকে সরে আসার বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘‘অনশন তুলতে অনুরোধ করছি। আলোচনায় বোসো। আমরা আমাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করছি। প্রায় সব ক’টিই দাবি পূরণ হয়েছে। ৩-৪ মাস সময় দাও। হাসপাতালগুলিতে নির্বাচন করাব। দয়া করে অনশন প্রত্যাহার করো। কাজে যোগ দাও।’’ কিন্তু এই বক্তব্যের পরে মুখ্যমন্ত্রী একটি ব্যাপারে স্পষ্ট উত্তর দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম পদত্যাগ ছাড়া আন্দোলনকারীদের সব দাবির সঙ্গেই সহমত রয়েছে তাঁর।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসার আর্জি জানান আন্দোলনকারীরা। এর পরেই আগামী সোমবার বিকেল ৫টায় নবান্নে বৈঠকের সময় দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সেই বৈঠকে যেন আন্দোলনকারীদের তরফে ১০ জনের বেশি প্রতিনিধি না যায় সেটা স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। এর আগে পুজোর আগেও মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু সেই বৈঠক যে সম্পূর্ণ ‘নিষ্ফলা’ ছিল তা স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছিল আন্দোলনকারীদের।