শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ উৎসবের আবহে আবহাওয়া নিয়ে আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কাই যেন একদম অক্ষর অক্ষরে মিলে গেল। পূর্বাভাসেরে একদিন আগেই আন্দামান সাগরে দানা বাঁধলো ঘূর্ণাবর্ত। আর সেটি ক্রমাগত শক্তি বাড়িয়ে আগামী বুধবার নাগাদ গভীর নিম্নচাপের চেহারা নেবে বলে মৌসুম ভবন সূত্রে জানা যাচ্ছে। যদিও গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তি বাড়াবে কিনা এবং শেষমেষ ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’-য় পরিণত হবে কিনা সেই নিয়ে এখনো অবধি জোর দিয়ে কিছু বলতে পারছে না হাওয়া অফিস।
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ | Low pressure In Bay Of Bengal
এদিকে একাধিক বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা থেকে শুরু করে আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের একাংশের অনুমান, আগামী সপ্তাহান্তেই বঙ্গোপসাগর একটি গভীর নিম্নচাপ দানা বাঁধতে পারে। মৌসুম ভবন সূত্রে খবর, বর্ষা এবং শীতের মাঝামাঝির সময় ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার অনুকূল পরিস্থিতি থাকে। তাই এই সময়টাও ব্যতিক্রম ঘটবে না। আন্দামান সাগর এবং বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হলে সেটি ঘূর্ণিঝড় ডানায় পরিণত হতে পারে।
অন্যদিকে আন্দামানে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তটি শক্তি বাড়িয়ে আগামী ২৪ অক্টোবর আঘাত হানতে পারে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে। যার জেরে দক্ষিণবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড এবং দক্ষিণ পশ্চিম বাংলাদেশের একাংশে প্রবল বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ | Cyclone Dana
বঙ্গোপসাগরে যে সিস্টেমটি তৈরি হয়েছে সেটি যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় তার নাম দেওয়া হবে ডানা। একাধিক বিদেশী আবহাওয়া মডেল দাবি করেছে, অন্ধ্র ওড়িশা উপকূলে ল্যান্ডফল করলে এর গতি ১৫০ কিলোমিটারের ওপরে হবে। কিন্তু যদি গতিপথ পরিবর্তন করে এটি বাংলাদেশ বা মায়ানমার উপকূলে ল্যান্ডফল করে তাহলে এর গতি ১০০ কিলোমিটারের বেশি হবে না।
বাংলায় বৃষ্টি
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে বিগত কয়েকদিন ধরে কলকাতা এবং লাগোয়া জেলাগুলিতে দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষায় বিদায় নিলেও কেন এই বৃষ্টি সে ব্যাপারে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, রাজ্যর উপকূলে একটি উচ্চচাপ বলয় আছে। সেটি গাঙ্গেয় বঙ্গের পরিমণ্ডলে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢোকাচ্ছে। সেই বাষ্প থেকে মেঘের তৈরী হচ্ছে।
দক্ষিণপশ্চিম এবং পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগরেও আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। এই আবহে বঙ্গোপসাগর এবং আশেপাশের এলাকায় বর্তমানে তিনটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। এই একের পর এক ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্ন চাপের প্রভাবে আগামী দিনে বাংলায় ব্যাপক পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে আগামী ২২-২৩ অক্টোবর অবধি মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যারা ইতিমধ্যে সমুদ্রে রয়েছেন তাদেরকে ফিরে আসতেও বলা হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি
আলিপুর আবহাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, আজ রবিবার অবধি বাংলার আবহাওয়া বার শুষ্ক থাকলেও আগামী মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে বাংলার আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটতে শুরু করবে। বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই হালকা মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। বুধবার ও বৃহস্পতিবার বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দক্ষিণবঙ্গে। সম্ভাবনা বেশি থাকবে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা।
আরও পড়ুনঃ ভারতের সবথেকে ধীরগতির ট্রেন ছাড়ে হাওড়া থেকে! দাঁড়ায় ১১১ স্টেশনে, সময় নেয় ৩৭ ঘণ্টা
উত্তরবঙ্গের কথা বললে, পার্বত্য এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। দার্জিলিং কালিম্পং-এর পার্বত্য জেলায় হালকা বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে।