প্রীতি পোদ্দার, কৃষ্ণনগরঃ গত বুধবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরে (Krishnanagar) পুলিশ সুপারের দফতরের খানিক দূরত্বের মধ্যেই একটি পুজোমণ্ডপ থেকে উদ্ধার হয়েছিল দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর দেহ। আর সেই ঘটনায় পরিবারের দাবি ছিল, তাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। আর সেই গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছিল ওই তরুণীর প্রেমিকের দিকে। তাই সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতেই রয়েছেন। কিন্তু পুলিশের তরফে জানানো হয়, তরুণীর এই অবস্থার আসল কারণ সবটাই জানা যাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের মাধ্যমে। আর সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই উঠে এল এক নয়া গুরুতর তথ্য। তদন্তের মোড় নিল অন্যদিকে।
রিপোর্টে কী তথ্য উঠে এল?
রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগরের ওই তরুণীর শরীরে পুড়ে যাওয়ার যে ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গিয়েছে, তার সব কটিই ‘থার্ড বা ফোর্থ ডিগ্রি’র। মাথার চুল, দুটি হাত ও মুখের অর্ধেকেরও বেশি অংশ পুড়ে গিয়েছে। আসলে তার গায়ে কেরোসিন তেল জাতীয় কিছু জিনিস দিয়েই গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি শ্বাসনালিতে কার্বনের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও ভিসেরা, ইউটেরাস, সার্ভিক্স, ফ্যালোপিয়ান টিউব, জরায়ু থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তা পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। কিন্তু নির্যাতিতার শরীরে মেলেনি কোন ধর্ষণ বা অন্য কোনও শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন।
গত শনিবার, যে স্থানে ঘটনাটি ঘটেছে সেই জায়গায় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু প্রাথমিক ময়নাতদন্তে চিকিৎসকরা ছাত্রীর অগ্নিদগ্ধ হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। এদিকে যেহেতু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আর প্লেস অফ অকারেন্সে বিভ্রান্তি দেখা দেওয়ায় ঘটনাস্থলে ফের যান বিশেষজ্ঞরা।
ধর্ষণের তথ্য উড়িয়ে দিলেও উঠছে একাধিক প্রশ্ন
অন্যদিকে প্রথম থেকেই ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার কথা উড়িয়েছে পুলিশ। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ছাত্রীর দেহের ময়নাতদন্ত হয়। প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে ময়নাতদন্তকারী বিশেষজ্ঞরাও দাবি করেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা ধর্ষণের কোনও প্রমাণ পাননি। আর এবার রিপোর্টেও সেটাই পরিষ্কার হল। তবে অধরা থেকে গেল বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর। এবার সেই ধাঁধা কাটাতে ময়দানে নামল পুলিশ।