প্রীতি পোদ্দার, নৈহাটি: কিছুদিন আগেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব মহাআনন্দে কাটিয়ে উঠেছে জনজাতি। তাতে কি! তাই বলে এখনই উৎসব শেষ হচ্ছে না। কারণ আর কিছুদিন পরেই আসতে চলেছে কালীপুজো। আর কালীপুজো মানেই বারাসাত, মধ্যমগ্রাম। তবে এই দুই এলাকা বাদেও কালীপুজোর আনন্দে গা ভাসিয়ে দেয় নৈহাটি এলাকা। কারণ সেখানে পূজিত হন বড়মা (Boro Maa)। এই সময় দেবী কালীকার আরাধনায় মেতে ওঠে গঙ্গাপাড়ের এই শহর। তাই তো দূর দূরান্ত থেকে ভক্তেরা ছুটে আসে বড়মা এর কাছে। প্রতি বছরই রেকর্ড ভিড় হয়। চলুন আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক চলতি বছর বড়মার পুজোর নির্ঘণ্ট বিবরণী।
নৈহাটিতে বড় মায়ের পুজো কখন হবে? Boro Maa Puja Timing
নৈহাটির বড়মার মাহাত্ম্য কথা শুধু নৈহাটির মধ্যে আবদ্ধিত নয়, দেশ বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে সেই কাহিনী। তাইতো দেশ বিদেশ থেকে মানুষ আসেন বড়মার পুজো দেখতে। এ যেন মহোৎসব। বলা হয় নৈহাটির বড় মা খুব জাগ্রত, মা কাউকে কখনও খালি হাতে ফেরান না। প্রত্যেকেই অপেক্ষায় থাকেন এই দিনের। নৈহাটিতে একটি রীতি আছে যে সর্বপ্রথম বড় মায়ের পুজো শুরু হওয়ার পরই নৈহাটির অন্য জায়গায় পুজো শুরু হবে। এদিকে চলতি বছর অমাবস্যা দু’দিন পড়েছে। আগামী ৩১ অক্টোবর কালী মায়ের আরাধনা। বড় মার পুজোও সেই দিনই। রাত ১১ টায় পুজোয় বসবেন পুরোহিত। রাত প্রায় ১টা নাগাদ হবে অঞ্জলি। ১:৩০ পর্যন্ত হবে অঞ্জলি।
যেহেতু এইসময় লক্ষ লক্ষ মানুষ বহু দূর দূরান্ত থেকে নৈহাটিতে বড়মার পুজো দিতে আসেন তাই তাদের কথা ভেবে এবং ভিড় এড়ানোর জন্য এবার এক সপ্তাহ আগে থেকেই পুজো নেওয়ার কাউন্টার খুলে দেওয়া হবে। আগামীকাল অর্থাৎ ২৪ তারিখ থেকে পুজো নেওয়া শুরু হবে। যা চলবে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। ৩০ ও ৩১ তারিখ নেওয়া হবে ফলপ্রসাদ ও সন্দেশের পুজো। অন্যদিকে ভোগ বিতরণের ক্ষেত্রেও আনা হয়েছে নয়া সুব্যবস্থা।
ভোগের নয়া ব্যবস্থা | Boro Maa Bhog |
জানা গিয়েছে এবার ৪০০০ কিলো ভোগের ব্যবস্থা করার কথা ভেবেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ আর সন্দেশ ভোগ আগে বিতরণ করা হতো পুজোস্থল থেকে। প্রতিবার মন্দির এলাকা থেকেই মায়ের প্রসাদ বিতরণ করা হয়। তবে এই বছর নৈহাটির মহেন্দ্র স্কুল ও পৌরসভার সামনে থেকে প্রসাদের কুপন বিলি করা হবে। মূলত ভিড়ের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিন মাকে সাজানো হবে ১০০ ভরি সোনা, ২০০ কেজি রুপোর অলঙ্কার দিয়ে। মাথা থেকে পা, বাহারি গয়নার অপূর্ব শোভা ফুটে ওঠে। তবে বড়মা বিসর্জনের দিন আবার সাজে বাহারি ফুলের সাজে। এত অপরূপ দেখে দৃশ্যটি যে মায়ের দিক থেকে চোখ ফেরানো যায় না।
বিসর্জন পর্ব কবে? Boro Maa Bisarjan
পাশাপাশি আগামী ৪ নভেম্বর দেবীর বিসর্জন হবে। আর মায়ের এই প্রতিমা বিসর্জন দেখতে জড়ো হয় লক্ষ লক্ষ মানুষ। অনেকে গঙ্গাবক্ষে নৌকা করেও ভাসান দেখতে যান। তাইতো এবার নিরাপত্তা নিয়েও কোমর বাঁধছে পুজো কমিটি ও প্রশাসন। কোনওরকম কোনও সমস্যায় ভক্তরা পড়লেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন তাঁরা।