কলকাতাঃ কোনরকম প্রাইভেট টিউটর ছাড়াই শুধুমাত্র Youtube-র সাহায্য নিয়ে সিভিল সার্ভিস পাশ করেন বিনি মুরুলি। এক সাক্ষাৎকারে বিনি এইটাও জানিয়েছেন যে তার বাবা কোনোমতেই তার কোচিংয়ের জন্য টাকা জোগান দিতে পারবেন না। কিন্তু বিনির স্বপ্ন এতে থেমে থাকেনি।
বিনির মা সাধারণ অঙ্গনওয়াড়ির কর্মি আর বাবা রান্নার কাজ করেন। দুজনের উপার্জন দিয়ে তাদের সংসারটাই কোনোরকম চলে।এতে তাদের কন্যাকে কোচিংয়ে পড়ানোর মতো সামর্থ্য নেই বললেই চলে। কিন্তু কন্যার স্বপ্ন অনেক উঁচু। সে চায় একজন প্রসাশক হতে। কন্যাকে কোচিং সেন্টারে ভর্তি করার মতো সামর্থ্য না থাকায় তাদের এই বিষয়েটা যথেষ্ট কষ্ট দিচ্ছিল। কিন্তু তাদের কন্যা তাদের কে চিন্তা না করতে বলে বললেন নিজেই সে তার পড়াশোনা চালিয়ে সিভিল পাশ করবেন। তারপর থেকেই শুরু হলো জার্নি। এবং তাতে সাফল্যও এলো।
ওড়িশার বোন্দা আদিবাসী সম্প্রদায়ের মেয়ে বিনি মুরুলি। বিভিন্ন স্যোশাল সাইত থেকে শুরু করে ইউটিউব দেখে নিজেই ওড়িশা সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় ফল প্রকাশ হওয়াতে বিনি ৫৯৬ র্যাঙ্কে সাফল্য অর্জন করেন। বোন্দা সম্প্রদায়ের থেকে বিনিই প্রথম যিনি এই উচ্চ পদের চাকরি পেলেন। ‘দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বাবা আমার রাঁধুনি আর মা অঙ্গীনওড়ারির সামান্য কর্মি ।মা-বাবার পক্ষে আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিলোনা। কিন্তু আমি আমার স্বপ্নকে ভেঙে যেতে দিইনি, উল্টে আমি ইউটিউব দেখেই পড়াশোনা শুরু করলাম সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়া বিভিন্ন সাইড থেকে পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন স্টাডি ম্যেটেরিয়াল জোগাড় করে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলাম।
ওড়িশার মালকানগিরির খেমাগুড়ার স্থানিয় বাসিন্দা রাম মুরুলি ও সুনামালি মুরুলি। তাদের কন্যা বিনি মুরুলি। মা সুনামালি অঙ্গনওয়াড়ির সাধারণ কর্মি এবং বাবা রাম মুরুলি একটা সরকারী স্কুলে রাঁধুনি। বিনি ছোটোবেলায় বোন্দার ঘাটে একটি সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। এবং পরে উচ্চশিক্ষার জন্য জওহর নবোদয় বিদ্যালয় পড়াশোনা করেন। তারপর তিনি জেপুরের বিক্রম দেবি কলেজ থেকে উদ্ভিদ বিদ্যায় স্নাতকোত্তর পাশ করেন। বিনি পড়াশোনার সাথে সাথে একটা আয়ুর্বেদিক ঔষধের সংস্থাতেও কাজ করেছেন কারণ সেখানেই উপার্জন দিয়েই তিনি নিজের পড়াশোনার খরচা চালাতেন। এই প্রথম না, বিনি এর আগেও ২০২০ সালে প্রথমবারের জন্য সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন কিন্তু তিনি তখন সাফল্য অর্জন করতে পারেননি। কিন্তু তাতে তিনি থেমে যাননি তিনি উল্টে বুঝেছিলেন এখনও নিজেকে প্রস্তুত করতে অনেক কষ্ট করতে করতে। সেই থেকেই তিনি আবার প্রথম থেকে নিজেকে গড়তে শুরু করেন। কোনোরকম কোচিং সেন্টার ছাড়াই শুরু হয় আবার জার্নি। ইউটিউব ভরসা থেকেই চালিয়ে যান পড়াশোনা। এবং তিনি শেষ পর্যন্ত তিনি সফল হন তার স্বপ্নে।
Congratulations to Bini Muduli, an OPSC aspirant from the Bonda tribal community in #Malkangiri, on becoming the first woman from the Particularly Vulnerable Tribal Group to crack the prestigious #Odisha Civil Service examination. A true inspiration for everyone, her success…
— CMO Odisha (@CMO_Odisha) October 20, 2024
কন্যার সাফল্যে গর্বিত বাবা রাম মুরুলি। তিনি আরও বলেন মেয়ের পড়াশোনার জন্য আমরা কিছুই সাহায্য করতে পারিনি তবে মেয়ে থেমে যায়নি সে তার নিজের চেষ্টায় আজ এতো বড়ো জায়গায় স্থান পেয়েছে। বিনির সাফল্যে আজ আমাদের সম্প্রদায়ের অনেক মেয়েই অনুপ্রেরণা পাবে এবং তারা সফলও হবে।