শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ কখনো ট্রেনে ওঠেননি, এরকম মানুষকে খুঁজে পাওয়া হয়তো দুষ্কর। প্রতিদিন দেশজুড়ে হাজার হাজার ট্রেন ছুটে চলেছে আর সেই ট্রেনের সবার হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ যে যার গন্তব্যে যাচ্ছেন। বর্তমান সময়ে রেল ব্যবস্থা দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে ভরসার অন্যতম পাত্র হয়ে উঠেছে। তবে এবার এই রেল ব্যবস্থাতেই বিরাট রকমের পরিবর্তন এল। বিশেষ করে একদিকে যখন দীপাবলিকে কেন্দ্র করে গোটা দেশের সাজো সাজো রব রয়েছে তখন রেলের একটি সিদ্ধান্তে শোরগোল পড়ে গেল সর্বত্র। উৎসবের আবহে আচমকায় প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রেল। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন।
প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি বন্ধ করল রেল!
প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করে গন্তব্যে পৌঁছায়। একই সময়ে, লোকেরা তাদের আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সদস্যদের ইত্যাদি ছাড়তে রেলস্টেশনেও যান। অনেকে স্টেশনের বাইরে আপনজনকে ড্রপ করে চলে যান, তো আবার অনেকেই আছেন যারা ট্রেনে না ছাড়া অবধি দাঁড়িয়ে থাকেন। এহেন পরিস্থিতিতে রেল যাত্রীদের সঙ্গে আসা আত্মীয়কে কিন্তু প্ল্যাটফর্ম টিকিট কাটতে হয়। তবে এই নিয়মে এবার বড় পরিবর্তন করল রেল। রেলে তরফে সাফ সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আপাতত ভিড়ের কথা মাথায় রেখে কোনওরকম প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি করা হবে না। এদিকে রেলের এখানে সিদ্ধান্তে মাথায় হাত পড়েছে বহু রেলযাত্রীর।
নর্দান রেলওয়ের তরফে জানানো হয়েছে, বেশ কিছু রেলস্টেশনে এই নিষেধাজ্ঞা আপাতত জারি থাকবে। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন যে কোন কোন স্টেশনে এই প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকবে? তাহলে জানিয়ে রাখি সে স্টেশনগুলি হল নয়া দিল্লি, পুরনো দিল্লি, হজরত নিজামুদ্দিন, গাজিয়াবাদ, আনন্দ বিহার ও দিল্লি সরাই রোহিল্লা।
বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড় রেলের
আগামী ৬ নভেম্বর পর্যন্ত প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি করা হবে না। দীপাবলি ও ছট পুজো উপলক্ষে পরিযায়ী শ্রমিকদের বিশাল ভিড়ের জন্যই এই সিদ্ধান্ত। তবে প্রবীণ নাগরিক, অজ্ঞ ও মহিলা যাত্রীদের এই নিয়ম থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
বান্দ্রায় বড় দুর্ঘটনা
সামনেই রয়েছে দীপাবলি থেকে শুরু করে ছট পুজোর মতো একের পর এক উৎসবম এদিকে তার আগে বাড়ি ফেরার ব্যস্ততা তুঙ্গে রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। রেলস্টেশনগুলিতে সাধারণ মানুষের হুড়োহুড়ি চোখে পড়ছে। এদিকে সেই হুড়োহুড়িতে রবিবার ভোররাতে পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হল মুম্বাইয়ের বান্দ্রা রেল টার্মিনাসে। আছে রবিবার ভোর ২:৫৫ নাগাদ রেলস্টেশনে ১ নম্বর প্লাটফর্মে ঢুকছিল ২২৯২১ নম্বর বান্দ্রা-গোরক্ষপুর এক্সপ্রেস। উত্তরপ্রদেশগামী এই ট্রেন স্টেশনে থামার আগেই নিশ্চিত সিট পেতে চলন্ত ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করেন অনেকে। আর সেই হুড়োহুড়িতে রীতিমতো পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। ঘটনায় আহত হয়েছেন অনেকে। মনে করা হচ্ছে, এই যেন ঘটনার থেকে শিক্ষা নিয়ে রেল বিক্রি করা বন্ধ করে দিল।