শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ জনসংখ্যা বৃদ্ধি গোটা বিশ্বব্যাপী এক সমস্যা। জনসংখ্যার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন দেশে চালু রয়েছে আলাদা আলাদা নিয়ম। চিন এশিয়া তথা গোটা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম জনবহুল দেশ হিসেবে পরিচিত। দেশটির পরিসীমা যেমন অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত, তেমনই এই দেশের জনসংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে রেকর্ড হারে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পৃথিবীর সবথেকে জনবহুল দেশের তালিকায় চিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা ছলে ভারতের। বর্ধিত জনসংখ্যার কারণে প্রমাদ গুনেছিল চিন, জনসংখ্যা বিস্ফোরণ ঠেকানোর জন্য চালু করার হয়েছিল নিয়ম। নিজেদের তৈরি করা এই নিয়মের ফাঁসে এবার পড়েছে শি জিনপিং-এর সরকার। পরিস্থিতি এমন যে এখন বাড়ি বাড়ি মহিলাদের ফোন করে সন্তান ধারণ করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে, মিডিয়া রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হচ্ছে।
ব্যাপারটা ঠিক কী?
আন্তর্জাতিক মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, সরকারী কর্মকর্তারা ৪০ বছরের কম বয়সী মহিলাদের শনাক্ত করছেন। সরকারি কর্মচারীরা মহিলাদের ফোন করে প্রথমে তাদের নাম জিজ্ঞাসা করছেন। নাম জানার পর যিনি ফোন করেছেন তিনি বলছেন, সাব-ডিস্ট্রিক্ট অফিস থেকে কথা বলছেন। অফিসার তখন মহিলাকে জিজ্ঞাসা করেন যে তিনি গর্ভবতী কিনা। তারপর মহিলাদের মাসিক চক্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে।
জনসংখ্যা সংকটে চিন!
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বড় ধরনের প্রচারণার অংশ হিসেবে চিনে সন্তান ধারণের বয়সী নারীদের সঙ্গে সরকারি প্রশাসনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তৃণমূল স্তরের সরকারি কর্মচারীদের তাদের আশেপাশের মহিলাদের সাথে যোগাযোগ করতে এবং তাদের গর্ভবতী হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিশেষ ড্রাইভে রাখা হয়েছে। জন্মহার বাড়াতে নতুন নীতি প্রণয়ন করছে চিন সরকার। সরকার নতুন পলিসি অপশন তৈরি করতে চাইছে, কারণ জন্মহার কমে যাওয়ায় দেশটি ডেমোগ্রাফিক ক্রাইসিসের দিকে যাচ্ছে।
৩০,০০০ পরিবারের মধ্যে চালানো হয়েছিল অভিযান
চিনের জনসংখ্যা ও পরিবার উন্নয়ন সম্পর্কিত নমুনা জরিপ করা হয়েছিল। যা ১১ অক্টোবর জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল, প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের সন্তান ধারণকারী বয়সের মহিলাদের লক্ষ্য করে। ১৫০টি কাউন্টির দেড় হাজার কমিউনিটি বা গ্রামকে কেন্দ্র করে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের নিয়ে এই প্রচারাভিযান চালানো হয়। চিন সরকার বলেছে, এই জরিপে ‘জন্ম ও বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে পরিবারের প্রকৃত অসুবিধা ও প্রয়োজনীয়তা’ বোঝার ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে।
এরপরের পদক্ষেপ কী?
এখনাকার বহু পরিবার কেন একের বেশি সন্তান ধারণ করার পক্ষে নয়, সে ব্যাপারেও সরকার জানতে চাইছে। এবং পরিবারের যাতে একের অধিক সন্তান নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ থাকে সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চিনের সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, অনেক নারী এক সন্তান নীতি নিয়ে ‘জোরালো অভিযোগ’ করেছেন, পাশাপাশি অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।