প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২০১৮ সালে শেষবার বাসের ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছিল মাত্র ১ টাকা। আর এই সময়ের মধ্যে একাধিকবার বেড়েছে জ্বালানির দাম ৷ সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বাসের যন্ত্রাংশের দাম ও বাস চালাতে যাবতীয় সরকারি কাগজপত্র তৈরির খরচও। মাঝে কোভিডের পড়ে বাসের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে কথা উঠলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা নাকচ করে দেয়। যার ফলে ভাড়া বৃদ্ধি না হওয়া-সহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত বাস সংগঠন।
আগামী বছর ১৫০০ বাস উধাও!
এদিকে চলতি বছর অনেক বাস বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। দিনে দিনে বাসের ব্যবসা যেন ‘অলাভজনক’ হয়ে পড়েছে। তাই নতুন বাস কেনার সামর্থ্য বহু বাস মালিকের নেই বলে জানাচ্ছে তারা। আর এই আবহেই পরিসংখ্যানের রিপোর্ট বলছে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে মার্চ মাসের মধ্যে একধাক্কায় ১৫০০ টি বাস বাতিল হয়ে যাবে। তাই এই পরিস্থিতিতে ‘ভারত স্টেজ-৪’ গোত্রের যে সব বাস চালু রয়েছে, সেগুলির পরিষেবা দেওয়ার মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানোর দাবিতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন বাসমালিকেরা।
মেয়াদ নিয়ে বড় দাবি বাস মালিক সংগঠনগুলির
সূত্রের খবর, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সিটি সাব-আরবান বাস সার্ভিসের বৈঠকে মোট ৫১টি বেসরকারি রুটের বাস মালিক এই বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে পরিবেশ আদালত ১৫ বছরের মেয়াদ সংক্রান্ত যে নির্দেশ দিয়েছে, তার কোন নির্দিষ্ট বিজ্ঞপ্তি নেই বলে দাবি করছে বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনগুলি। তাই তাঁরা চাইছেন এ বিষয়ে স্বচ্ছতা আসুক। গোটা বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখুক রাজ্যের শীর্ষ আদালত। সেই আবেদনই তাঁরা করতে চলেছেন।
অতীতের তুলনায় বাসের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। রাস্তায় এখন হাতে গোনা দেখা যায় পুরনো প্রযুক্তির কিছু বাস। বেশীরভাগই চলে ব্যাটারি এবং CNG-চালিত বাসের সংখ্যা। তাই বাস থেকে পরিবেশ দূষণের মাত্রা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। এদিকে বাসমালিক সংগঠনের দাবি, দূষণ সৃষ্টিকারী বাসের সংখ্যা এইমুহুর্তে অনেকটাই কমে গিয়েছে তাই চালু থাকা বাসের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানান তাঁরা। যদিও পরিবেশকর্মীদের দাবি, জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায় এ ভাবে বদল করা মুশকিল।
আর এই বাস ঝঞ্ঝাটে রীতিমত সঙ্কটের মুখে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। কারণ, যে সংখ্যক বাস বাতিল হচ্ছে সেই তুলনায় সম সংখ্যক বাস রাস্তায় নামানো হচ্ছে না। যার ফলে যাতায়াতে নানারকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। একইসঙ্গে রাজ্য সরকার এর স্ক্র্যাপ নীতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বাস সংগঠনের সদস্যদের মুখে। নতুন এই নীতিতে একাধিক বাস সম্পূর্ণ স্ক্র্যাপ করে দেওয়া হচ্ছে। আর সেটাকে আটকানোই এখন মূলত উদ্দেশ্য বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনগুলির।