প্রীতি পোদ্দার, বর্ধমান: সমাজে মা দুর্গা, মা কালীকে দেবী রূপে পূজা করা হলেও এখনও সমাজে অবহেলিত নারীরা। দিনের পর দিন নানা অত্যাচারের সমূখীন হতে হচ্ছে তাদেরকে। খবরের শিরোনামে উঠে আসছে একের পর এক ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির অভিযোগ। সম্প্রতি বর্ধমানে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল এক কোচিং সেন্টারের অঙ্কের শিক্ষককে। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। পুলিশের হেফাজতে রয়েছে ওই শিক্ষক।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, অভিযুক্ত অঙ্ক শিক্ষক শুভব্রত দত্তর আদি বাড়ি হল বীরভূমের সাঁইথিয়া থানা এলাকায়। কিন্তু বর্তমানে তিনি বর্ধমান শহরের শাঁখারিপুকুরের বরফকল এলাকায় থাকেন। সেখানকার পার্কাস রোডে তার কোচিং সেন্টার রয়েছে। আর সেই কোচিং সেন্টারে পড়ত বছর ষোলোর ওই ছাত্রী। ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, তাঁর মেয়ের সঙ্গে নাকি অভিযুক্ত শিক্ষক মাঝেমধ্যেই দুর্ব্যবহার করত। এমনকি কয়েকবার ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণও করেছে বলে অভিযোগ। চলতি বছরের মে মাসে ছাত্রীর সঙ্গে প্রথম ঘটনাটি ঘটে। এ বছরের অগস্ট মাসে ছাত্রীর সঙ্গে ফের একই ঘটনা ঘটে। ভয়ে এত দিন কিশোরী বাড়িতে কাউকে কিচ্ছু জানায়নি। বুধবার অবশেষে মা-বাবার কাছে মুখ খোলে সে। আর তার পরেই ঝামেলা শুরু।
শিক্ষকের পাশে দাঁড়িয়েছে পড়ুয়াদের একাংশ
জানা গিয়েছে, সময় নষ্ট না করে কিশোরীকে নিয়ে বুধবার অন্য লোকজনকে ও তার বাবা-মা কোচিং সেন্টারে চড়াও হন। সেখানে শিক্ষককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু সেই সময়েই কোচিংয়ের ছাত্রছাত্রী সহ অভিভাবকরা অভিযুক্ত শিক্ষকের পাশে এসে দাঁড়ান। তাঁদের দাবি অভিযুক্ত শিক্ষককে ফাঁসানো হয়েছে। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা অভিযোগ’ আনা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বর্ধমান মহিলা থানার পুলিশ। অভিযুক্তকে রাতেই থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল তাঁকে আদালতে হাজির করান তদন্তকারীরা।
ওইদিন আদালত চত্বরেও বহু অভিভাবক হাজির হন। তাঁরা জানান আইনি লড়াইয়ে শিক্ষকের পাশে থাকবেন। গতকাল ধৃত শুভব্রত দত্তকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁকে সাত দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু যেহেতু এই মামলা পকসো আদালতে বিচারাধীন তাই আদালত ধৃতকে আপাতত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ৬ নভেম্বর তাঁকে পকসো আদালতে হাজির করানো হবে। সেখানেই পুলিশি হেফাজতের আবেদনের শুনানি হবে। পাশাপাশি ধৃতের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর আবেদন মঞ্জুর হয়েছে।